
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া গাজা চুক্তির বিরুদ্ধে পাকিস্তানে ব্যাপক বিক্ষোভ চলছে। শনিবার (১১ অক্টোবর) তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) দলের সমর্থকরা লাহোর থেকে রাজধানী ইসলামাবাদে পৌঁছানোর চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত ও নিহত হয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, শনিবার সকালে লাহোরের শাহদারা এলাকায় টিএলপি সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। বিকেল নাগাদ ধর্মীয় দলটির লোকজন পাঞ্জাবের মুরিদক শহরে পৌঁছেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, টিএলপি দাবি করেছে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের ১০ জনেরও বেশি কর্মী নিহত হয়েছেন। আর নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, বিক্ষোভে কমপক্ষে ৪০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
টিএলপি দলটি গত বৃহস্পতিবার লাহোরে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মার্কিন-মধ্যস্থতায় সই হওয়া যুদ্ধবিরতির বিরোধিতা করতে ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাসের দিকে মিছিল শুরু করে।
এএফপির সাংবাদিকদের মতে, শুক্রবার বিক্ষোভগুলো সহিংস হয়ে ওঠে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের ওপর পাথর ছুঁড়ে মারে।
ইসলামাবাদ এবং রাওয়ালপিন্ডির বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, প্রধান সড়কগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক বিঘ্নিত হচ্ছে।
ডনের প্রতিবেদন অনুসারে, বিক্ষোভকারীদের আগমনের প্রত্যাশায় রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে জাহাজের কন্টেইনার স্থাপন করা হয়।
ইসলামাবাদ ট্রাফিক পুলিশের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাজধানীতে সকল ধরণের ভারী যানবাহনের প্রবেশ স্থগিত থাকবে। ইসলামাবাদের ফৈজাবাদ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে ট্র্যাফিক ডাইভারশন কার্যকর করা হচ্ছে এবং যাত্রীদের অসুবিধা এড়াতে বিকল্প রুট ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
টিএলপি জানিয়েছে, বিক্ষোভগুলো মূলত ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিরোধিতা করার জন্য সংগঠিত হয়। কেননা পাকিস্তান এই চুক্তি সমর্থন করেছিল।
বিক্ষোভকারীরা ইসলামাবাদের দিকে যাত্রা শুরু করার সময় টিএলপির জ্যেষ্ঠ সদস্য আল্লামা মুহাম্মদ ইরফান এএফপিকে বলেন, ‘গাজার জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করা ছাড়া আমাদের আর কোনো দাবি নেই। আমরা কখন ইসলামাবাদে পৌঁছাবো তা আমাদের জানা নেই, কিন্তু সরকার আমাদের সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করছে। আমরা সরকারের সঙ্গে মোটেও আলোচনা করছি না।’
পাকিস্তানের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তালাল চৌধুরী প্রতিবাদকারীদের ইসলামাবাদে প্রবেশ করতে দেবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ইসলামাবাদে কোনো মৌলবাদী কার্যকলাপের স্থান নেই। হামাস এবং ফিলিস্তিনের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি চুক্তি আপনার কাছে কেন গ্রহণযোগ্য নয়?’