
ভারতের বেঙ্গালুরুতে একজন টেলিভিশন অভিনেত্রীকে যৌন হয়রানি, প্রতারণা ও অপরাধমূলক ভয় দেখানোর মামলায় পরিচালক, অভিনেতা ও প্রযোজক বি আই হেমন্ত কুমারকে গ্রেপ্তার করেছে রাজাজিনগর পুলিশ। তদন্ত চলমান থাকায় অভিনেতাকে বর্তমানে বিচারবিভাগীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে হেমন্ত ওই অভিনেত্রীর কাছে গিয়ে একটি সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। দুই পক্ষের মধ্যে দুই লাখ রুপির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার অগ্রিম হিসেবে ৬০ হাজার রুপি পেয়েছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু শুটিং শুরু করতে অনেক দেরি হয়। হেমন্ত সেই সময় অভিনেত্রীকে অশ্লীল দৃশ্যে অভিনয় করার জন্য প্ররোচিত করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, মুম্বাই ভ্রমণের সময় হেমন্ত অভিনেত্রীকে অযাচিতভাবে স্পর্শ করেন। যখন তিনি (অভিনেত্রী) প্রতিরোধ করেছিলেন, তখন হেমন্ত হুমকি দেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী অভিনেত্রী অভিযোগ করেছেন, অভিনেতা হেমন্ত শুটিং বেশ বিলম্ব করেছিলেন এবং তাকে খোলামেলা পোশাক পরতে ও অশ্লীল দৃশ্য করতে জোর করেন এবং হয়রানি শুরু করেন। শুটিংয়ের সময় তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। এসব মেনে নিতে অভিনেত্রী যখন অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, তখন তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফিল্ম চেম্বারের মধ্যস্থতায় শুটিং শেষ করার পরও তাকে হয়রানি ও ভয় দেখানো অব্যাহত রাখেন হেমন্ত।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সালে মুম্বাইয়ে একটি প্রোমোশনাল অনুষ্ঠানে তার পানীয়তে মদ মিশিয়ে ছিলেন হেমন্ত। তারপর মদ্যপ অবস্থায় ছবি তুলেন ও ভিডিও করেন। যা পরবর্তীতে ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইল করেন অভিনেতা। এসব কাজে অস্বীকৃতি জানানোয় অভিনেত্রীকে হুমকি দেওয়া হয় এবং সন্ত্রাসী দিয়ে তাড়া করা হয়। এমনকি তার মাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন অভিনেত্রী।
এছাড়া এ অভিনেতার বিরুদ্ধে সেন্সর বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া সিনেমাটি সম্পাদনা এবং সেন্সরবিহীন ভিডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা, ব্যক্তিগত তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া এবং জনসমক্ষে মানহানির অভিযোগ রয়েছে।
এ ঘটনায় বেঙ্গালুরু সিটি সিভিল কোর্টের দ্বারস্থ হন ভুক্তভোগী অভিনেত্রী। পরে হেমন্তকে ভিডিও পোস্ট করা থেকে বিরত থাকার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু অভিযোগ, অভিনেতা সেই আদেশ লঙ্ঘন করেছেন এবং মানহানিকর পোস্ট অব্যাহত রাখেন।
জানা যায়, গ্রেপ্তারের পর আদালতে হাজির করা হয়েছে হেমন্তকে।
স্থানীয় পুলিশ বলছে, তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে তারা শিগগিরই বিবৃতি দিয়ে বিস্তারিত জানাবে।