Dark Mode Light Mode

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Follow Us
Follow Us
English English

দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসার, চিকিৎসার খরচ মেটাতেই নিঃস্ব বহু পরিবার

দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসার, চিকিৎসার খরচ মেটাতেই নিঃস্ব বহু পরিবার দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসার, চিকিৎসার খরচ মেটাতেই নিঃস্ব বহু পরিবার
দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসার, চিকিৎসার খরচ মেটাতেই নিঃস্ব বহু পরিবার


বাঁ স্তনের সমস্যা নিয়ে চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকায় ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন ফাহিমা বেগম (৪৫)। ডাক্তার দেখানোর সাত দিনের মধ্যেই অপারেশন করাতে হয়েছে। খরচ লেগেছে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এরপর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। প্রতিবার কেমোথেরাপি দিতে যাওয়া-আসা ও অন্যান্য খরচ মিলে ৩০ হাজার টাকার মতো লাগে।

সম্প্রতি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল অনকোলজি বিভাগে এই প্রতিবেদকের কথা হয় ফাহিমার সঙ্গে। বলেন, ‘আমার অবস্থা ভালো ছিল না। তাই তাড়াতাড়ি করে বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন করাই।’ ফাহিমার স্বামী লাকড়ি ব্যবসায়ী আক্কাস আলী জানান, ধানের জমি বন্ধক রেখে, ঋণ করে স্ত্রীর চিকিত্সা চালাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘একটা গাভি ছিল। বাছুরসহ সেটাও বিক্রি করে দিয়েছি। আমাদের মতো গরিব মানুষের পক্ষে ক্যানসারের চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়।’ শেষ পর্যন্ত স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ চালিয়ে নিতে পারবেন কি না, এ নিয়েই দুশ্চিন্তা তার! 

Advertisement

মেডিক্যাল অনকোলজি বিভাগের ঐ কক্ষেই ছিলেন ক্যানসারে আক্রান্ত ১০ জন নারী। রাজধানীর বাইরে থেকে আসা সমাজের মধ্যবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার খরচ মেটানোর গল্পটা কমবেশি একই রকম। ক্যানসারের মতো জটিল রোগের চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে অনেক পরিবার তাদের সঞ্চিত অর্থ শেষ করে, সম্পত্তি বিক্রি করে, ঋণ করতে বাধ্য হয়। এভাবে অনেক পরিবারকেই নিঃস্ব হতে হয়। এত কিছুর পরও দেরিতে রোগ শনাক্ত ও চিকিৎসা শুরু হওয়ার ফলে অনেক রোগীর শেষ রক্ষা হয় না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর দেওয়া তথ্যমতে, বেসরকারি হাসপাতালে ক্যানসার চিকিৎসায় উচ্চ ব্যয়ের প্রধান খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, সার্জারি, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ফি এবং হাসপাতালে দীর্ঘ সময় থাকার খরচ। অন্যদিকে, সরকারি পর্যায়ে বিনা মূল্যে বা স্বল্প খরচে ক্যানসার চিকিৎসার সুযোগ খুবই সীমিত। বেসরকারি হাসপাতালে উচ্চ খরচের কারণে অনেক পরিবার দেশের বাইরে যাওয়ার কথা চিন্তা করে।  সেখানে সব মিলিয়ে খরচ আরও বেশি।

বাংলাদেশে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্তন ক্যানসার শনাক্ত হয় রোগের তৃতীয় বা চতুর্থ পর্যায়ে। যে কারণে রোগীদের সুস্থ হওয়ার হারও কম হয়। অন্য ক্যানসারগুলোর ক্ষেত্রেও শনাক্ত হওয়ার পর্যায় একই রকম হয়ে থাকে। খুব কম ক্ষেত্রেই একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার শনাক্ত হয়। এর বড় কারণ অসচেতনতা ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা না করানোর প্রবণতা। 

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে ক্যানসারে আক্রান্ত একজন রোগীর চিকিৎসায় গড়ে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ৮৪০ টাকা খরচ হয়। এই খরচ সর্বনিম্ন ৮১ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয় ওষুধপত্রের জন্য। ক্যানসারের প্রথম স্তরে গড়ে চিকিৎসা খরচ প্রায় ৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা। দ্বিতীয় স্তরে এই খরচ বেড়ে প্রায় ৭ লাখ টাকায় পৌঁছায়। এই ব্যয় মেটাতে প্রায় ৭৮ শতাংশ পরিবারকে ঋণ করতে হয়। ৬৫ শতাংশ পরিবার নিয়মিত আয় থেকে খরচ বহন করে। ৫৬ শতাংশ পরিবার সঞ্চয় ভাঙে। ৪০ শতাংশ পরিবার সম্পদ বিক্রি করতে বাধ্য হয়।

ব্যয়বহুল চিকিৎসার বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের সরকারি হাসপাতালের খরচ মধ্যবিত্তের নাগালে থাকলেও সেখানে চিকিৎসা পেতে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকতে হয়। ফলে অনেকের চিকিৎসায় ভাটা পড়ে। নিম্নবিত্ত অনেক পরিবার উপায়ন্তর না দেখে চিকিত্সাই বন্ধ করে দেন। এছাড়া আমাদের দেশে নাগরিকদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্য বিমাও নেই। দাতব্য কর্মসূচিও তেমন নেই। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় দরিদ্র রোগীদের ৫০ হাজার টাকা দিয়ে থাকে। সাধারণ স্বাস্থ্য বিমা ও দাতব্য সহায়তা থাকলে ক্যানসার চিকিৎসার উচ্চ খরচের ধকল কিছুটা হলেও সামাল দেওয়া সম্ভব হতো।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্যানসার প্রতিরোধেও সবাইকে জোর দিতে হবে। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো এক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি, যাতে প্রাথমিক পর্যায়েই রোগ শনাক্ত ও চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয়। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন খান ইত্তেফাককে বলেন, হাসপাতালে মজুত থাকলে রোগীদের বিনা মূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী ওষুধের সরবরাহ থাকে না। ফলে রোগীদের ওষুধ নিজেদের খরচে বাইরে থেকে কিনতেই হয়। এছাড়া সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেয়, বেসরকারি সংস্থা ‘আস্থা’ সহায়তা দেয়। আকিজ গ্রুপও রোগীদের ৩০  হাজার টাকা করে দেয়।

একই হাসপাতালের ক্যানসার বিভাগের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ মো. ওয়ারেছ মারুফ রহমান ইত্তেফাককে বলেন, ক্যানসারের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সরকারের একার পক্ষে এই ব্যয় বহন করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা, এনজিও এগিয়ে এলে হয়তো নিম্ন আয়ের মানুষগুলো চিকিৎসা পেতে পারত। এছাড়া চিকিৎসা বিমা থাকা জরুরি ছিল।

তিনি বলেন, ‘ক্যানসারের কিছু অত্যাধুনিক চিকিৎসা আছে, যেমন—ইমিউনোথেরাপি, যা ক্যানসার কোষের বিরুদ্ধে দেহের রোগপ্রতিরোধ-ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে তোলে। তবে এই চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। আমাদের এখানে আসা রোগীদের মধ্যে ১০০ জনে দুই/তিন জন এই চিকিৎসা নিতে পারেন। রেডিও থেরাপির উন্নত মেশিন বের হয়েছে, যা শুধু ক্যানসার আক্রান্ত কোষকে মেরে ফেলে। ভালো কোষগুলোকে জীবিত রাখে। সেই মেশিন অনেক দামি, সেটি ব্যবহার করা গেলে রোগীরা উপকৃত হবেন।’





Source link

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post
ইউক্রেনে এক রাতে ৫৪৯টি ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোন হামলা রাশিয়ার, নিহত ৫ 

ইউক্রেনে এক রাতে ৫৪৯টি ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোন হামলা রাশিয়ার, নিহত ৫ 

Next Post
বিনিয়োগ স্থবিরতা বাড়ছে বেকারত্ব

বিনিয়োগ স্থবিরতা বাড়ছে বেকারত্ব

Advertisement