
কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা জেমস ক্যামেরনের মহাকাব্যিক বিজ্ঞান কল্পকাহিনী সিরিজ ‘অ্যাভাটার’-এর তৃতীয় কিস্তি ‘অ্যাভাটার: ফায়ার অ্যান্ড অ্যাশ’ বিশ্বজুড়ে বক্স অফিসে অভাবনীয় সাফল্য বজায় রেখেছে। মুক্তির মাত্র ১৪ দিনের মাথায় সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ৭৬০ মিলিয়ন ডলার আয়ের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।
বক্স অফিস বিশ্লেষকদের ধারণা অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই এটি ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার আয়ের অনন্য রেকর্ড স্পর্শ করবে। বড়দিনের দীর্ঘ ছুটির আমেজকে কাজে লাগিয়ে গত কয়েক দিনে সিনেমাটি আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ১৮১.২ মিলিয়ন ডলার এবং বিশ্বব্যাপী মোট ২৪৫.২ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে। আয়ের এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে এটি খুব দ্রুতই চলতি বছরের সবচেয়ে সফল সিনেমার তালিকায় শীর্ষস্থানে জায়গা করে নেবে।
চলচ্চিত্রটির আয়ের উৎস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, উত্তর আমেরিকার বাজার থেকে এটি এখন পর্যন্ত ২১৭ মিলিয়ন ডলার এবং আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ৫৪২ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এই সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে চীন, যেখানে সিনেমাটি সর্বোচ্চ ৯৯.৬ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
এ ছাড়া ফ্রান্স থেকে ৫৪.৪ মিলিয়ন, জার্মানি থেকে ৪৩.১ মিলিয়ন এবং দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৩২.১ মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করেছে এই কিস্তিটি। বর্তমানে ২০২৫ সালের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ আয়কারী হলিউড সিনেমা হিসেবে অবস্থান করলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, আগামী কয়েক সপ্তাহে এটি ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড: রিবার্থ’ এবং ‘এ মাইনক্রাফট মুভি’-র মতো বড় বাজেটের সিনেমাগুলোকে অনায়াসেই ছাড়িয়ে যাবে।
আশা করা হচ্ছে যে, ২০২৫ সালের তৃতীয় সিনেমা হিসেবে ‘অ্যাভাটার ৩’ ১০০০ মিলিয়ন ডলারের ক্লাব বা ১ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড স্পর্শ করবে। এর আগে চলতি বছরে কেবল ‘লিলো অ্যান্ড স্টিচ’ এবং ‘জুটোপিয়া ২’ এই বিরল সম্মান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ডিজনি প্রযোজিত ‘জুটোপিয়া ২’ মুক্তির পঞ্চম সপ্তাহেও তার আধিপত্য ধরে রেখেছে এবং বর্তমানে এর মোট আয়ের পরিমাণ ১.৪২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে ইউনিভার্সাল পিকচার্সের সংগীতধর্মী চলচ্চিত্র ‘উইকড: ফর গুড’ বিশ্বব্যাপী ৫০৩.৯ মিলিয়ন ডলার আয় করে বিনিয়োগের তুলনায় বড় অংকের মুনাফা নিশ্চিত করেছে, যদিও এটি ২০২৪ সালের প্রথম কিস্তির ৭৫৮ মিলিয়ন ডলার আয়ের তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে।
জেমস ক্যামেরন পরিচালিত এই সিনেমাটির বিশেষত্ব এবং প্যান্ডোরা গ্রহের নতুন ‘আগুন ও ছাই’ সংস্কৃতির দৃশ্যপট দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহে টানছে। দর্শকরা যেমন এর উন্নত ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট বা ভিএফএক্স দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন, তেমনি বক্স অফিসের এই জয়জয়কার নির্দেশ করছে যে ‘অ্যাভাটার’ ফ্র্যাঞ্চাইজি এখনো চলচ্চিত্র জগতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী।