
বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনকে একতরফা ও জালিয়াতিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করে সেই নির্বাচনে যুক্ত কমিশন ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সরকার। নির্বাচন প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থা পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে ওই নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী প্রায় ১৩ লাখ কর্মকর্তাকে বাদ দেওয়া সম্ভব কি না- তা পর্যালোচনার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
নির্দেশনা অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার নিয়োগে বড় ধরনের পরিবর্তনের উদ্যোগ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে ২৯ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়ে রদবদল শুরু করেছে সরকার। ডিসিরাই পরবর্তী নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানান, বিগত তিন নির্বাচনে যারা ন্যূনতমভাবে সংশ্লিষ্ট ছিলেন, তাদের এবার দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে। তবে তা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, সতর্কভাবে যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে তাদের পরিবেশ-পরিস্থিতি, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও আচরণ বিবেচনায় নেওয়া হবে। পাশাপাশি নতুন নিয়োগ ও বদলির মাধ্যমেও কাঠামো পুনর্বিন্যাস করা হবে।
সাধারণত স্কুলশিক্ষক, ব্যাংক কর্মকর্তা ও বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীরা পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন। তাই ‘সবাইকে একসাথে অযোগ্য ঘোষণা করা হলে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব কাঁধে নেবে কে?’-এ প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞ জেসমিন টুলি মনে করেন, রাজনৈতিকভাবে পক্ষপাতদুষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্ব থেকে সরানো প্রয়োজন। তবে অনেক কর্মকর্তা চাকরির বাধ্যবাধকতার কারণে আগের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছেন; সাংবিধানিক দায়িত্ব হওয়ায় তা প্রত্যাখ্যান করার সুযোগ ছিল না। তাই সৎ, দক্ষ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়াই শ্রেয়। তারা পূর্বের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করলেও সমস্যা নেই।
তিনি আরও বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতে কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ইসিকে কঠোর ও সতর্ক অবস্থান নিতে হবে।