
বাংলাদেশে স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকারের সংখ্যা এখনও উদ্বেগজনক। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত শ্রমশক্তি জরিপ (এলএফএস) ২০২৪-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত বছর দেশে স্নাতক পাস বেকারের সংখ্যা ছিল প্রায় ৮ লাখ ৮৫ হাজার। এতে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের মধ্যে বেকারত্বের হার দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৫০ শতাংশ, যা আগের বছরের ১৩ দশমিক ১১ শতাংশের তুলনায় বেশি।
সংখ্যার হিসেবে আগের বছরের তুলনায় স্নাতক বেকারের সংখ্যা ২০ হাজার কমলেও, নারীর বেকারত্বের হার ২০ শতাংশের বেশি। এ সময়ে দেশের সার্বিক জাতীয় বেকারত্বের হার ছিল ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
অন্যদিকে, মাধ্যমিকের নিচে পড়ালেখা করা বেকারের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৭ হাজারে। তাদের বেকারত্ব বেড়েছে ০ দশমিক ৫১ শতাংশ পয়েন্ট।
পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি খাতে প্রত্যাশিত হারে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়নি। ব্যবসার সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিও সীমিত পর্যায়ে আছে।
ড. ফাহমিদা বলেন, ‘চাকরির প্রকৃত উৎস মূলত সরকার, কিন্তু সেই সুযোগ সংখ্যায় সীমিত এবং প্রতিবছর আসে না। এ অবস্থায় কর্মসংস্থান বৃদ্ধির আশা করা বাস্তবসম্মত নয়।’
তিনি মনে করেন, এখন পর্যন্ত অর্থনীতির সাফল্য হলো ধস ঠেকানো। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি, ব্যাংক খাত স্থিতিশীল রাখা এবং সীমিত মূলধন দিয়ে রিজার্ভ পুনর্গঠনের চেষ্টা অর্থনীতিকে পুরোপুরি বিপর্যয় থেকে বাঁচিয়েছে।
তবে সমস্যা থেকে গেছে। তাঁর ভাষায়, ‘জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়লেও এটি বিভ্রান্তিকর। কারণ বিনিয়োগ বাড়েনি। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ না বাড়লে কর্মসংস্থান কীভাবে বাড়বে?’
তিনি আরও বলেন, গত বছর প্রত্যাশিত বিনিয়োগ হয়নি। রাজনৈতিক সহিংসতা, কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং উৎপাদন হ্রাসের কারণে প্রবৃদ্ধি কমেছে এবং জিডিপির পূর্বাভাসও নিচে নামানো হয়েছে।