
ভারতের কলকাতা এবং আশেপাশের এলাকায় ভারী বর্ষণের ফলে কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে এবং পরিবহন ব্যাহত হয়েছে। বাসিন্দারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি) আঞ্চলিক প্রধান এইচআর বিশ্বাস বলেন, গতকাল মঙ্গলবার ভোরবেলায় বেশিরভাগ বৃষ্টিপাত হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ২৫১ দশমিক ৬ মিমি বৃষ্টিপাতের এই রেকর্ড ১৯৮৮ সালের পর শহরে দেখা যাওয়া সবচেয়ে ভারী বৃষ্টিপাত।
পুলিশ জানিয়েছে, বৃষ্টিপাতের ফলে কলকাতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৯ জন মারা গেছে এবং ২ জনের পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হিন্দুদের সবচেয়ে বড় বার্ষিক উৎসব দুর্গা পূজা। অপ্রত্যাশিত এই বৃষ্টির কারণে শহর স্থবির হয়ে পড়েছে, যার ফলে আসন্ন পূজার প্রস্তুতি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
শহরজুড়ে অনেক প্যান্ডেল, উৎসবের জন্য আনা বাঁশ ও অন্যান্য উপকরণ দিয়ে তৈরি অস্থায়ী কাঠামো এবং দেব-দেবীদের অসম্পূর্ণ প্রতিমাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় রাস্তাঘাট কোমর সমান পানির নিচে ডুবে গেছে এবং যানবাহন আটকা পড়েছে। যাত্রীরা বন্যার পানিতে ডুবে থাকা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
সড়ক, ট্রেন, এমনকি বিমান চলাচলও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। বেশ কয়েকটি ফ্লাইট এবং ট্রেন বাতিল বা বিলম্বিত হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে একাধিক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে বাসিন্দাদের অসুবিধা আরও বেড়েছে।
আগামী শুক্রবার থেকে উৎসবের ছুটি কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার বুধবার ও বৃহস্পতিবার স্কুলসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা রাস্তাঘাট এবং রেলপথ পরিষ্কার করার জন্য পানি পাম্প মোতায়েন করেছে। খাদ্য বিতরণ ও জরুরি পরিষেবাসহ ত্রাণ ব্যবস্থা চলছে।
কর্মকর্তারা আশা করছেন বুধবার সন্ধ্যার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে এবং নিম্নাঞ্চলে পানির স্তর ধীরে ধীরে কমে যাবে। কিন্তু বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।