
মোবাইল ফোন খাতে নিরাপত্তা ও বৈধতা নিশ্চিত করতে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) বাস্তবায়ন এবং মোবাইল হ্যান্ডসেট খাতের সুষ্ঠু বিকাশে সুষম কর–কাঠামো প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)।
সংগঠনটির দাবি, এ ব্যবস্থা চালু হলে সরকার প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব পাবে, দেশে বাড়বে বিদেশি বিনিয়োগ ও তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থান।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
স্থানীয় মোবাইলশিল্পের বর্তমান চিত্র ও প্রতিবন্ধকতাগুলো তুলে ধরে এমআইওবির সভাপতি জাকারিয়া শহীদ জানান, বর্তমানে দেশে ১৮টি মোবাইল সংযোজন ও উৎপাদন কারখানা গড়ে উঠেছে, যেখানে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। এই খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী শ্রমিক। কারখানাগুলো ১৫ লাখ স্মার্টফোন ও ২৫ লাখ ফিচার ফোন প্রতি মাসে উৎপাদন করতে পারে। অবৈধ বা গ্রে মার্কেটের কারণে সরকার বছরে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারাচ্ছে। গ্রে মার্কেটের আকার প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা, যা স্থানীয় শিল্পের ৩০-৪০ শতাংশ উৎপাদন সক্ষমতাকে অব্যবহৃত রাখছে। এনইআইআর বাস্তবায়িত হলে এই অবৈধ বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে এবং সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে।
এমআইওবির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, এনইআইআর চালু হলে ফোনের দাম বাড়বে—এমন প্রচার একটি বিশেষ মহলের স্বার্থরক্ষার জন্য ছড়ানো হচ্ছে। বরং গ্রে মার্কেট বন্ধ হলে দেশে হাই-এন্ড ফোন উৎপাদন সম্ভব হবে এবং গ্রাহকেরা বর্তমানের চেয়ে কম দামে ভালো মানের ফোন পাবেন।
মোবাইলশিল্পে সিন্ডিকেট ও নতুন করে কর আরোপের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলেও দাবি করেছে এমআইওবি। তাদের দাবি, ১৮টি প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি প্রমাণ করে এটি একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার, এখানে একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের সুযোগ নেই। এ ছাড়া মোবাইল আমদানিতে ৫৭ শতাংশ শুল্ক ২০১৯ সাল থেকেই চালু রয়েছে, বর্তমান সরকার নতুন কোনো কর আরোপ করেনি।
এমআইওবির মতে, এনইআইআর সিস্টেম চালু হলে গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা ও সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া বৈধ রিফারবিশ বা পুরোনো ফোন বেচাকেনায় কোনো বাধা থাকবে না। ফলে এনইআইআর দেশের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান ও ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য একটি জাতীয় ঢাল হিসেবে কাজ করবে।