
টানা দুই বছরের পতনের পর গত অর্থবছরে বাংলাদেশের হিমায়িত মাছ রপ্তানি খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই খাতে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে হিমায়িত মাছ ও চিংড়ি রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের ৩২৫ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় বেশি। ভারত ও চীনের চাহিদা বৃদ্ধি এ খাতের পুনরুদ্ধারে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে সংশ্লিষ্টরা বলছেন।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, মাছ রপ্তানি খাতের আয়ের প্রধান অংশ এখনো চিংড়ির দখলে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ২৩ হাজার ২৩৮ টন হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি করে ২৯৬ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় মূল্যে ১৯ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং পরিমাণে ২১ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি।
অন্যদিকে, হিমায়িত মাছের রপ্তানি মূল্য ১৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেড়ে ৯২ দশমিক ৪১ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়ালেও রপ্তানির পরিমাণ ১০ দশমিক ৭শতাংশ কমে ৭ হাজার ৯৫১ টনে নেমে এসেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি, মহামারিজনিত বিপর্যয় এবং ‘আর্লি মরটালিটি সিনড্রোম’-এর মতো রোগে খুলনা ও সাতক্ষীরার চিংড়ি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রপ্তানি ব্যাপকভাবে কমে গিয়েছিল। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানি কমে যায় ২০ শতাংশের বেশি, পরের বছর আবারও প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাস পায়। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মানদণ্ডে আধুনিক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও কোল্ড-চেইন ব্যবস্থায় বিনিয়োগ, টাকার মান কমে যাওয়ায় রপ্তানি প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি, চীনের চাহিদা বৃদ্ধি এবং ইউরোপের রেস্তোরাঁ খাতে চাহিদা ফেরার ফলে এ খাত আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
চিংড়ি রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজারে পরিণত হয়েছে চীন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশটি বাংলাদেশ থেকে ৫৬ দশমিক ৬৯ মিলিয়ন ডলারের চিংড়ি আমদানি করেছে। অন্যদিকে, নেদারল্যান্ডস আমদানি করেছে ৪৭ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন ডলার এবং যুক্তরাজ্য ৪৪ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলারের চিংড়ি আমদানি করেছে। বাংলাদেশের হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি আয়ের অর্ধেকেরও বেশি আসে ইউরোপীয় এই দেশগুলো থেকে।