
আজারবাইজানের স্ট্রাইকার এবং দলের অধিনায়ক জাফারজাদা সেভিনজ বাংলাদেশের জালে গোলটা করেই কাঁদলেন। এমন কান্না দেশের ফুটবল দর্শকের চোখে লেগে গেল। গোলটা করেই দৌড়ে গিয়ে ডাগআউটে গিয়ে মায়ের ছবি আঁকা টি-শার্ট উঁচিয়ে ধরলেন। কাঁদলেন অঝোরে। মনে হচ্ছিল কালই তার কাছের আত্মীয় কেউ মারা গেছেন। আজারবাইজান ২-১ গোলে বাংলাদেশকে হারাল।
খেলা শেষে জাফারজাদা দেশের পতাকা জড়িয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরার সময় দর্শকের ডাকে ছবি তুলতে গেলেন। দর্শক ছবি তুললেন। কেউ মোবাইল ফোনটা হাতে ধরিয়ে দিলেন, সেলফি তুললেন। পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ডাকছেন। কিন্তু জাফারজাদা সেদিকে তাকাচ্ছেন না। পুলিশ বলছে ফ্রেন্ড আসেন আসেন। জাফারজাদা সেলফির পর সেলফি তুলেই যাচ্ছেন। কথা বললেন গোল করার পর কেন কাঁদলেন। জাফারজাদা বললেন, ‘৫ বছর আগে আমার মা মারা গেছেন। ১ ডিসেম্বর ছিল আমার মায়ের মৃত্যুর দিন। আমি আমার মাকে আজকের গোলটা উৎস্বর্গ করেছি।’
মাকে হারিয়ে এতটা কষ্ট বুকে বেঁধে রেখেছেন, সেটা কাউকে বলেননি। মায়ের মৃত্যুর দিনের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা। গোল করবেন মনের ভেতরে ধরে রেখে ছিলেন। কাল রাতে ঢাকা স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথম গোলটা করেছেন জাফারজাদা। দ্বিতীয় গোলটা করেছেন জাফারোভা ফিদান। ম্যাচ জয়ের পুরো কৃতিত্ব তার গলায়। এক কথায় বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়েছেন জাফারজাদা। বলছিলেন আমার মা অনেক কষ্ট করে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাকে ছেড়ে আমি অসহায়। যখন ঢাকায় বসে তার মৃত্যুর কথা স্মরণ করছিলাম, তখন আমরা খেলাটাকে প্রাধান্য দিয়ে মনোযোগ রেখেছি মাঠে। মায়ের মৃত্যুর পরদিনই আমি গোল করলাম।’
বাংলাদেশ ২ গোল হজম করেছে। দুই গোলের জন্যই বাংলাদেশের রক্ষণভাগ দায়ী। শিউলী আজিম, নবীরন খাতুন, সামসুন নাহারদের কারণে প্রথম গোল হজম করে বাংলাদেশ, ১-০। এই গোলের পর ৩৪ মিনিটে গোল করে বাংলাদেশ খেলায় ফিরেছিল। স্বপ্না রানীর কর্নারের আজারবাইজানের গোলরক্ষক শরিফোভা ঝাপটা মেরে দূরে ফেলে দিলে বল চলে যায় বক্সের ওপর। সেখান থেকে মারিয়া বাম পায়ে লব করে দারুণ একটি গোল করেছেন, সমতা এনেছিলেন ১-১। মন কেড়েছে মারিয়ার গোল। চোখ ধাঁধানো গোলের পরও বাংলাদেশ আবারও রক্ষণের ভুলে গোল হজম করে ৮৪ মিনিটে। আকার ইয়েলিজের ক্রসের বল ফাঁকায় দাঁড়িয়ে গোল করেন ম্যানিয়া এসরা, ২-১।
থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ২ ম্যাচ, এখন ঢাকায় মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ১-০, কাল আজারবাইজানের বিপক্ষে ২-১, চার ম্যাচ হারল। বাংলাদেশের ইংলিশ কোচ পিটার বাটলার পুরোনো অজুহাত। নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এটা নেই, ওটা নেই। লিগ নেই। নানা কথা।