
দেশের ফুটবল ভক্তদের কাছে হামজা চৌধুরী শুধু লেস্টার সিটির একজন মিডফিল্ডার নন, তিনি লাল-সবুজের স্বপ্নও বয়ে বেড়ান। তাই শুক্রবার রাতে কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে বার্মিংহামের বিপক্ষে ম্যাচে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখা গেল তাকে, মুহূর্তেই বুক ধকধক করতে শুরু করলো দেশ জুড়ে হাজারো সমর্থকের। সেই দৃশ্য যেন ভক্তদের চোখে দুঃস্বপ্ন হয়ে ধরা দিল। খানিক্ষণের জন্য হয়তো ভাবতেও শুরু করে দিয়েছিল যে, নেপালের বিপক্ষে আসন্ন প্রীতি ম্যাচগুলো কি তবে তাকে ছাড়া খেলতে হবে? যদিও ম্যাচ শেষে ভেসে উঠেছে স্বস্তির ইঙ্গিত।
গত পরশু রাতে চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে বার্মিংহামের বিপক্ষে নেমেছিল হামজা চৌধুরীর দল লেস্টার সিটি। কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে লেস্টার জিতেছে ২-০ গোলের ব্যবধানে। এই ম্যাচেরই ৬৯ মিনিটে চোট পান হামজা। প্রতিপক্ষ স্ট্রাইকার ডেমিরাই গ্রের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে ডান পায়ে আঘাত পান হামজা। কিছুক্ষণ পর ফিজিওরা ছুটে আসেন মাঠে, কিন্তু শেষমেশ ৭২ মিনিটে কষ্ট চেপে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। তার পরিবর্তে নামেন রিকার্ডো পেরেইরা। তবে চোট কতটা গুরুতর, তা তখনো জানা যায়নি। পরবর্তীকালে এ নিয়ে ক্লাবটির পক্ষ থেকেও কোনো তথ্য মেলেনি। তাতেই দুশ্চিতা বাড়ে দেশের ফুটবল সমর্থকদের।
চলতি বছর ২৫ মার্চ শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে অভিষেক হয় হামজার। তারপর থেকে আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছাড়াও দেশের ফুটবল ভক্তরা হামজার ক্লাব ফুটবলের ম্যাচগুলোও নিয়মিত ফলো করেন। সবাই পরশু রাতে হামজাকে মাঠে চোট পেয়ে কাতরাতে দেখেছে। এ দৃশ্য দেখে দুশ্চিন্তায় ভুগছে লাল-সবুজের ফুটবল ভক্তরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হামজার চোটের ছবি দিয়ে নিজেদের আবেগও প্রকাশ করতে দেখা যায় অনেককে। তবে ম্যাচ শেষে সেই দুশ্চিন্তার মেঘ কাটতে শুরু করে।
লেস্টার সিটি ক্লাবের ওয়েবসাইটে একটি পোস্ট ম্যাচ ভিডিও দেখা যায়। যেখানে হামজা হাসি-খুশি ছিলেন। তাতে বোঝা গিয়েছে যে, চোট খুব বেশি একটা মারাত্মক নয়, তাই তিনি মাঠেই ছিলেন। এছাড়া পরবর্তীকালে হামজা নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজেও একটি পোস্ট দেন জয় নিয়ে। সেখানে লেখেন, ‘বিরতিতে যাওয়ার আগে শেষটা দারুণভাবে হলো। আমাদের পারফরম্যান্সে সৃষ্ট প্রত্যাশা ও লড়াইয়ের মানসিকতা সবাই উপভোগ করেছেন।’
হামজার পোস্ট দেখে স্বস্তি শুধু লেস্টারের ভক্তদের মধ্যে আসেনি, প্রাণ ফিরে এসেছে বাংলাদেশের ফুটবল সমর্থকদের মধ্যেও। কারণ আগামী ৬ ও ৯ সেপ্টেম্বর নেপালের বিপক্ষে তাদের ঘরের মাটিতে গিয়ে দুইটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে এই দুই ম্যাচকে সামনে রেখে একটা দল পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। যেখানে হামজারও নাম রয়েছে। কিন্তু লেস্টারের ১৩ ও ২০ সেপ্টেম্বরের চ্যাম্পিয়নশিপ ম্যাচের কথা মাথায় রেখে তার অংশগ্রহণ এখন অনিশ্চিত। যদিও বাংলাদেশ দলের টিম ম্যানেজার আমের খান জানিয়েছিলেন যে, হামজা দলের সঙ্গে সরাসরি নেপালে যোগ দেবেন, সেখান থেকে আবার ফিরে যাবেন, এ নিয়ে লেস্টার সিটির সঙ্গে আলোচনা করছেন তারা।