Dark Mode Light Mode

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Follow Us
Follow Us
English English

স্মার্টফোনে বুঁদ শিশু-কিশোররা, আগ্রহ কমছে ‘মাথা খাটানোয়’

স্মার্টফোনে বুঁদ শিশু-কিশোররা, আগ্রহ কমছে ‘মাথা খাটানোয়’ স্মার্টফোনে বুঁদ শিশু-কিশোররা, আগ্রহ কমছে ‘মাথা খাটানোয়’
স্মার্টফোনে বুঁদ শিশু-কিশোররা, আগ্রহ কমছে ‘মাথা খাটানোয়’


দেশে শিশু-কিশোরদের মধ্যে স্মার্টফোন আসক্তি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এর ফলে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কমছে। একই সঙ্গে কমছে মেধাচর্চা বা ‘মাথা খাটানো’র আগ্রহ। ছোটখাটো প্রশ্ন করলেই তাদের মুখে শোনা যায় ‘দেখি গুগল কী বলে’ জাতীয় উত্তর। এরপর হয়তো হাতড়ে বেড়াবে মা-বাবার স্মার্টফোন। হাতে পেলেই ঢুকে পড়বে গেম কিংবা ভিডিওর জগতে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষাবহির্ভূত কাজে ৭১ শতাংশ শিক্ষার্থী স্মার্টফোন ব্যবহার করছে। বাবা-মা যথেষ্ট সময় না দেওয়ায় এবং খেলার মাঠ ও সঙ্গীর অভাবে ৮৫ ভাগ শিশু আসক্ত হয়ে পড়ছে মোবাইলে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে এই প্রজন্মের জন্য বড় ধরনের বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।

ভয়ংকর পরিসংখ্যান : একাধিক গবেষণা অনুযায়ী, শিশুদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ কার্টুন দেখার জন্য, ৪৯ শতাংশ গেম খেলার জন্য, ৪৫ শতাংশ ভিডিও বা গান শোনার জন্য স্মার্টফোন ব্যবহার করে। অথচ পড়াশোনার কাজে ফোন ব্যবহার করে মাত্র ১৪ শতাংশ শিশু।

Advertisement

শিশুর মোবাইল ফোন আসক্তি কতটা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, এক গবেষণায় সেই চিত্র ফুটে উঠেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ নাজমুল হকের তত্ত্বাবধানে ঐ গবেষণা প্রতিবেদন ২০২৩ সালে এপ্রিলে আন্তর্জাতিক জার্নাল এলসভিয়ারের জার্নাল অব ইফেক্টিভ ডিস-অর্ডারে প্রকাশিত হয়। ঐ গবেষণায় উঠে আসে, বাংলাদেশের প্রায় ৮৬ শতাংশ প্রি-স্কুল শিশু স্মার্টফোনে আসক্ত। এর মধ্যে ২৯ শতাংশ শিশুর মারাত্মক স্মার্টফোন আসক্তি রয়েছে। গবেষণায় আরো দেখা যায়, ৯২ শতাংশ শিশু তাদের মা-বাবার স্মার্টফোন ব্যবহার করে আর ৮ শতাংশ শিশুর ব্যবহারের জন্য পৃথক স্মার্টফোন আছে। বাংলাদেশের শিশুরা প্রতিদিন গড়ে প্রায় তিন ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করে, যা ইউনিসেফ কর্তৃক সুপারিশ করা সর্বোচ্চ সময়ের প্রায় তিন গুণ বেশি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশু গড়ে প্রতিদিন পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত স্মার্টফোন ব্যবহার করে।

ভয়াবহ আসক্তির বাস্তব উদাহরণ : গত বছর শেরপুরের ১০ বছরের এক শিশু রাজধানীর একটি ভিডিওতে দেখে নতুন মডেলের মোবাইল কেনার লোভে বাবার ট্রাংক থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে একাই ঢাকায় চলে আসে। বিপণিবিতানে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করায় তাকে নিরাপত্তাকর্মীরা পুলিশের হাতে তুলে দেন। শিক্ষাবিদরা বলছেন, এ ঘটনা প্রমাণ করে শিশুর আসক্তি কীভাবে বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে।

অন্যদিকে, যশোরের শার্শায় নবম শ্রেণির ছাত্রী নিশিতা ইসলাম (১৩) মোবাইল ফোন না পাওয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহানাজ আক্তার তুবা (১৫) একই কারণে প্রাণ দেয়। গোপালগঞ্জে দশম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির মোল্লা (১৬) বাবার কাছে ৫৫ হাজার টাকার মোবাইল না পেয়ে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। অটোচালক বাবার পক্ষে এত টাকা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় অভিমানেই এ ঘটনা ঘটে।

পরিবারে অশান্তি, আচরণে পরিবর্তন : রাজধানীর মোহাম্মদপুরের এক অভিভাবক জানান, আগে তার ছেলে ভদ্র ছিল, কোনো বায়না করত না। এখন ফোন ছাড়া সে খায় না, ঘুমায় না, পড়াশোনায় মনোযোগ দেয় না। বরং ফোন থেকে বিরত থাকতে বললে বাবা-মায়ের ওপর আক্রমণাত্মক আচরণ করে। শুধু তাই নয়, অনলাইন গেমসের আসক্তি পারিবারিক শান্তিও নষ্ট করছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, সন্তানরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করছে, অল্পতেই রেগে যাচ্ছে, ইন্টারনেট না থাকলে বা ফোনের চার্জ শেষ হলে অস্বাভাবিক আচরণ করছে।

বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক অধ্যাপক বলেন, ‘গুগল-ইউটিউব নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা বইমুখী পড়াশোনা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। বই হাতে নিচ্ছে কম, ফোন খুঁজে বেড়াচ্ছে বেশি। এতে মেধাচর্চা কমছে, ভুল তথ্য শেখার ঝুঁকি বাড়ছে এবং নৈতিক অবক্ষয় হচ্ছে।’ একই প্রতিষ্ঠানের আরেক অধ্যাপক বলেন, ‘প্রযুক্তি ভালো, কিন্তু স্মার্টফোন এখন শিশুদের জন্য মারণাস্ত্রের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিভাবকরা সন্তানকে শান্ত রাখার জন্য হাতে ফোন দিয়ে দিচ্ছেন, কিন্তু এতে তাদের মানসিক বিকাশ ও সামাজিক আচরণ নষ্ট হচ্ছে।’

শিশু বিশেষজ্ঞরা বলেন, জীবনের প্রথম পাঁচ বছরে শিশুর ৯৫ শতাংশ মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে। এই সময়ে মোবাইল ব্যবহার করলে সে বিকাশ ব্যাহত হয়। ফলে চোখের সমস্যা, মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথা, মনোযোগের ঘাটতি ও আচরণগত সমস্যা দেখা দেয়। যুক্তরাজ্যের চক্ষু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারে দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে, শ্রবণশক্তি নষ্ট হতে পারে, পুরুষের প্রজনন ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। গবেষকরা বলছেন, ফোন থেকে নির্গত উচ্চমাত্রার রেডিয়েশন ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়াতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, মোবাইল-প্রযুক্তি এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়। তবে এর অপব্যবহার রোধ করতে হবে। এজন্য অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে, সন্তানকে সময় দিতে হবে, খেলাধুলার সুযোগ তৈরি করতে হবে এবং পড়াশোনার জন্য সীমিত ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। না হলে, স্মার্টফোনের এই আসক্তি আগামী প্রজন্মকে মেধাহীন ও অসুস্থ করে তুলবে।





Source link

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post
অভ্যন্তরীণ সংকটে পর্যটন খাত

অভ্যন্তরীণ সংকটে পর্যটন খাত

Next Post
আইনের শাসন নিশ্চিত করতে নিরবচ্ছিন্নভাবে নাগরিকবান্ধব সংস্কার চালিয়ে যাচ্ছি

আইনের শাসন নিশ্চিত করতে নিরবচ্ছিন্নভাবে নাগরিকবান্ধব সংস্কার চালিয়ে যাচ্ছি

Advertisement