
আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, তার স্ত্রী দেলোয়ারা সুলতানা এবং ছেলে রায়হান শাকিব—এই তিনজনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দুদকের পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক তানভীর আহমদ বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন।
দুদকের এজাহার সূত্রে জানা যায়, সাবেক এমপি আ স ম ফিরোজ সরকারি দায়িত্ব পালনকালীন জ্ঞাত আয়ের উৎসের বাইরে ৩ কোটি ২৯ লাখ ২৬ হাজার ৪৮৪ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, অনুসন্ধানকালে আ স ম ফিরোজের মোট আয় পাওয়া যায় ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৪৪ হাজার ৯৫৬ টাকা এবং পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় ৫ কোটি ৯০ লাখ ৩ হাজার ৮৭৭ টাকা। ব্যয় ব্যতীত সঞ্চয় হয় ৮ কোটি ৬৬ লাখ ৪১ হাজার ৭৯ টাকা। অথচ তার নামে ও দখলে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১১ কোটি ৯৫ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬৩ টাকা। ফলে বৈধ আয়ের বাইরে তার সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ২৯ লাখ ২৬ হাজার ৪৮৪ টাকা, যার উৎসের প্রমাণ তিনি দেখাতে পারেননি।
একই ধারায় তার স্ত্রী দেলোয়ারা সুলতানার বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে। দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, দেলোয়ারা সুলতানা বৈধ আয়ের বাইরে ১ কোটি ১ লাখ ১ হাজার ৬৫৪ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। তার মোট বৈধ আয় ৫০ লাখ ১১ হাজার ৫৬৩ টাকা হলেও তার নামে থাকা সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫১ লাখ ১৩ হাজার ২১৭ টাকা।
অন্যদিকে, আ স ম ফিরোজের ছেলে রায়হান শাকিবের বিরুদ্ধেও একই আইনে মামলা হয়েছে। দুদক বলছে, তার মোট বৈধ আয় ২ কোটি ৭০ লাখ ৫ হাজার ৪১৪ টাকা হলেও তার নামে সম্পদের পরিমাণ ৬ কোটি ৯১ লাখ ৯০ হাজার ৮৪২ টাকা। অর্থাৎ বৈধ আয়ের বাইরে তিনি ৪ কোটি ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৪২৮ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন, যার কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।
এ তিনটি মামলা দায়েরের খবর জানাজানি হলে বাউফল ও পটুয়াখালীজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।