
কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর নাগরিকত্ব নিয়ে ওঠা অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) আদালত জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তি প্রমাণের মতো কোনো উপাদান নেই। এই রায়ের পর কংগ্রেস শিবিরে স্বস্তির হাওয়া বইছে। বিজেপি নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার আগেই তার নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছিল।
বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় গত মাসে এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে এই অভিযোগ সামনে এনেছিলেন। তিনি দাবি করেন যে, ১৯৮০ সালের লোকসভা ভোটের আগে নয়াদিল্লি কেন্দ্রের ভোটার তালিকায় সোনিয়ার নাম উঠেছিল, অথচ সেই সময়েও তিনি ভারতের নাগরিকত্ব পাননি। অমিত মালবীয়র অভিযোগ ছিল যে, গান্ধী পরিবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আঁতাত করে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এই কাজ করেছে। তিনি ১৯৮০ সালের ভোটার তালিকার একটি ছবি প্রকাশ করে এটিকে প্রমাণ হিসেবে দেখিয়েছিলেন।
বিজেপির অভিযোগ অনুযায়ী, ১৯৮২ সাল পর্যন্ত সোনিয়ার নাম ভোটার তালিকায় ছিল, অথচ সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী তিনি ১৯৮৩ সালে নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। এই বিষয়ে আদালতে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছিল, যেখানে আবেদনকারী বলেন যে, ১৯৮৩ সালের এপ্রিল নাগাদ নাগরিকত্ব পাওয়ার পরেও ১৯৮০ সালের জানুয়ারি থেকে তার নাম ভোটার তালিকায় ছিল, যা সরাসরি নির্বাচনী বিধির লঙ্ঘন।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, বহু পুরোনো এই অভিযোগকে বিজেপি নতুন করে সামনে এনেছিল মূলত রাজনৈতিক আক্রমণের হাতিয়ার হিসেবে। নাগরিকত্ব প্রসঙ্গ তুলে সোনিয়াকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু আদালতের রায়ে সেই চেষ্টা কার্যকর হলো না। তবে বিরোধীরা বলছে, আদালতের এই খারিজ মানেই অভিযোগ ভিত্তিহীন নয়, বরং এটি জনগণের মনে আবারও সন্দেহ তৈরি করেছে।
ইতালিতে জন্মগ্রহণ করা সোনিয়া ১৯৬৮ সালে রাজীব গান্ধীকে বিয়ে করার পর ভারতের রাজনৈতিক পরিবারের সঙ্গে যুক্ত হন। পরে তিনি ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন এবং কংগ্রেসের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আসেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আদালতের রায় তাকে আইনি জটিলতা থেকে মুক্ত করলেও বিরোধীদের আক্রমণ এখানেই শেষ হবে না। নির্বাচনী রাজনীতির অঙ্গনে এই বিষয়টিকে বারবার ব্যবহার করা হবে।