
পাকিস্তানে বিচার বিভাগ ও সামরিক কাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ২৭তম সাংবিধানিক সংশোধনী বিল সিনেটে উপস্থাপন করেছে ফেডারেল সরকার। শনিবার এই বিলটি সিনেটে পেশ করা হয় এবং পরে আইন ও বিচারবিষয়ক স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
আজারবাইজান থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করা প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা বিলের খসড়াটির অনুমোদন দেয়ার পরই এটি সিনেটে উত্থাপন করা হয়।
আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার সিনেটে বিলটি উত্থাপন করে বলেন, ২৭তম সংশোধনী গণতন্ত্রের সনদের (Charter of Democracy) অংশ হিসেবে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি। ২০০৬ সালে পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির মধ্যে স্বাক্ষরিত ওই সনদের একটি লক্ষ্য ছিল এই সংস্কার, যা ১৮তম সংশোধনীর সময় বাস্তবায়িত হয়নি।
সামরিক কাঠামোয় পরিবর্তন
খসড়া অনুযায়ী, সংবিধানের ২৪৩ অনুচ্ছেদে সংশোধন আনার প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে বর্তমানে বলা আছে ‘সশস্ত্র বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ও নেতৃত্ব ফেডারেল সরকারের হাতে থাকবে’ এবং ‘সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ড প্রেসিডেন্টের হাতে ন্যস্ত থাকবে’।
প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ‘চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি (CJCSC)’ পদ বিলুপ্ত করে নতুন পদ ‘চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস’ সৃষ্টির প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া ফিল্ড মার্শাল, মার্শাল অব দ্য এয়ার ফোর্স এবং অ্যাডমিরাল অব দ্য ফ্লিট—এসব সম্মানসূচক উপাধিকে আজীবন মর্যাদা দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এই উপাধি বাতিলের ক্ষমতা শুধু সংসদের হাতে থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেসের সুপারিশে প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের কমান্ডার নিয়োগ দেবেন, যিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে আসবেন।
ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত গঠন
বিলে প্রস্তাব করা হয়েছে নতুন ‘ফেডারেল কনস্টিটিউশনাল কোর্ট’ গঠনের, যা সুপ্রিম কোর্টের কিছু ক্ষমতা গ্রহণ করবে। প্রস্তাবিত আদালতে দেশের সব প্রদেশের সমান প্রতিনিধিত্ব থাকবে। আদালতের প্রধান বিচারপতি তিন বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন।
বিচারক নিয়োগে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন এবং আদালতে বিচারকের সংখ্যা নির্ধারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে থাকবে বলে খসড়ায় উল্লেখ আছে।
২৭তম সাংবিধানিক সংশোধনীর প্রধান বিষয়গুলো