
গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সুদানের আল-ফাশার শহরে সাম্প্রতিক গণহত্যার মাঝে আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ দাবি করেছে, তাদের যোদ্ধারা সেনাবাহিনীর একটি কার্গো বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) অবরুদ্ধ শহর বাবানুসায় বিমানটি ভূপাতিত করা হয়।
আরএসএফ গুলি করে ভূপাতিতের দাবি করলেও দেশটির সেনাবাহিনী বলেছে, একটি সামরিক কার্গো বিমান বিধ্বস্ত হয়ে সকল ক্রু সদস্য নিহত হয়েছেন।
সেনাবাহিনী জানায়, মঙ্গলবার যখন বিমানটি অবরুদ্ধ শহর বাবানুসায় সেনাবাহিনীর কাছে সরবরাহ পাঠাচ্ছিল, তখন এই ঘটনা ঘটে। সেনাবাহিনী এই শহরে আরএসএফের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, বিমানটির ‘ডান ইঞ্জিনে কারিগরি ত্রুটি’ দেখা দেয়, যার ফলে ভারসাম্য হারিয়ে আগুন ধরে যায়। বিমানে কতজন আরোহী ছিলেন, তা নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।
পৃথক বিবৃতিতে আরএসএফ দাবি করে, তারা পশ্চিম কর্ডোফানের একাধিক এলাকায় বিমান হামলা চালিয়ে কয়েক ডজন বেসামরিক লোককে হত্যা করেছে। এরপর বাবানুসার ওপর একটি ‘ইলিউশিন যুদ্ধবিমান’ গুলি করে ভূপাতিত করা হয়।
আরএসএফ তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে বিমানের জ্বলন্ত ধ্বংসাবশেষের একটি ভিডিও পোস্ট করেছে, কিন্তু আর কোনো প্রমাণ দেয়নি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সুদান ট্রিবিউনের মতে, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে প্রথমবার এই শহরে আরএসএফ আক্রমণ চালায়। এরপর থেকে তারা শহরটি দখলের চেষ্টা করছে।
গত মাসের শেষের দিকে ১৮ মাস ধরে দুর্ভিক্ষ এবং ভারী বোমাবর্ষণে অবরুদ্ধ উত্তর দারফুরের রাজধানী আল-ফাশার এবং সুদানী সেনাবাহিনীর ষষ্ঠ পদাতিক ডিভিশন কমান্ড দখল করে আরএসএফ।
সুদানের ডক্টরস ইউনিয়ন জানিয়েছে, আল-ফাশারে হামলায় ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ৩ লাখ ৯০ হাজার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
গত সোমবারও উত্তর কর্দোফানের সেনা-অধিকৃত শহর আল-ওবাইদের বাইরে আল-লুয়েব গ্রামে একটি জানাজায় হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ৪০ জনকে হত্যা করে আরএসএফ।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) সতর্ক করে দিয়েছে, এই ধরনের নৃশংসতা যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের সমান হতে পারে। তারা আল-ফাশারের ঘটনাগুলো নিয়ে নতুন তদন্ত শুরু করেছে। আদালতটি ২০০৩ সালে শুরু হওয়া দারফুর সংঘাতের সঙ্গে সম্পর্কিত মামলাগুলোও তদন্ত করছে।