
অনেকদিন ধরেই সার্বিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে দেশটির শিক্ষার্থীরা। সরকারের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন দেশটির টেনিস তারকা নোভাক জোকোভিচ। এতে সরকারের রোষানলে পড়েন তিনি।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানানোয় জোকোভিচের প্রতি চরম অসন্তুষ্ট হয় সার্বিয়া সরকার। সে জন্য সার্বিয়ার সরকারঘেঁষা সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে ‘দেশবিরোধী’ দুর্নামও পান জোকোভিচ। তখন থেকে গুঞ্জন ছিল, দেশ ছাড়তে বাধ্য হতে পারেন এ টেনিস তারকা। অবশেষে সেই গুঞ্জনই সত্যি করে পরিবার নিয়ে সার্বিয়া ছেড়ে চলে গেছেন জোকোভিচ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পরিবার নিয়ে সার্বিয়া ছেড়ে গ্রিসে স্থানান্তরিত হয়েছেন জোকোভিচ। ২৪ গ্র্যান্ড স্লামজয়ী এই টেনিস তারকা তার সন্তানদের গ্রিসে একটি প্রাইভেট স্কুলে ভর্তি করেছেন। ছেলে স্টেফান এবং মেয়ে তারাকে এথেন্সের সেন্ট লরেন্স কলেজে ভর্তি করে দিয়েছেন তিনি।
জোকোভিচ এথেন্সের দক্ষিণের একটি এলাকায় বাড়িও কিনে ফেলেছেন বলে জানিয়েছে ডেইলি মেইল। সম্প্রতি এথেন্সের কাভুরি টেনিস ক্লাবে ছেলের সঙ্গে তাকে খেলতেও দেখা গেছে। জানা গেছে, গ্রিক গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করবেন জোকোভিচ। গ্রিসে নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ করলে এই ভিসা পাওয়া যায়।
গত বছর নভেম্বরে রেলওয়ে স্টেশনের ছাদ ধসে ১৬ জন নিহত হওয়ার পর সার্বিয়ায় প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভ চলছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভুচিচের প্রশাসনের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানান জোকোভিচ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমর্থন জানিয়ে এই জোকোভিচ লেখেন, ‘(আমি) এমন কেউ যে তারুণ্যের শক্তি এবং তাদের আরও ভালো ভবিষ্যতের আশায় গভীরভাবে বিশ্বাস রাখে। আমি বিশ্বাস করি, তাদের কথা শোনাটা গুরুত্বপূর্ণ।’ পরবর্তী সময় অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে পাওয়া জয় সার্বিয়ায় আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের প্রতি উৎসর্গ করেন জোকোভিচ।
বেলগ্রেডে একটি বাস্কেটবল ম্যাচে ‘শিক্ষার্থীরা চ্যাম্পিয়ন’ লেখা বার্তাসংবলিত জাম্পার পরে উপস্থিত হন জোকোভিচ। এসব কারণে সার্বিয়ার সরকারি ঘরানার সংবাদমাধ্যমগুলো তাকে ‘দেশবিরোধী’ এবং ট্যাবলয়েডগুলো ‘ভুয়া দেশপ্রেমিক’ আখ্যা দেয়। যদিও সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট ভুচিচ এর আগে বলেছেন, তিনি কখনোই জোকোভিচকে নিয়ে খারাপ কিছু বলবেন না।