Dark Mode Light Mode

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Follow Us
Follow Us
English English

রোহিঙ্গা সম্মেলন: এবার আসুক সমাধান

রোহিঙ্গা সম্মেলন: এবার আসুক সমাধান রোহিঙ্গা সম্মেলন: এবার আসুক সমাধান
রোহিঙ্গা সম্মেলন: এবার আসুক সমাধান


আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের উদ্যোগে রোহিঙ্গাবিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর আগে ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে একটি প্রস্তুতিমূলক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনটি ছিল জাতিসংঘের বৃহত্তর সম্মেলনের প্রস্তুতির অংশবিশেষ। কক্সবাজার সম্মেলনের উদ্দেশ্য হলো-রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ এবং ৩০ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের প্রস্তুতি। 

কক্সবাজার সম্মেলনে আলোচনার বিষয় ছিল-রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন ও মিয়ানমারে শান্তি প্রতিষ্ঠা। মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি এবং শরণার্থীশিবিরের নিরাপত্তাও ছিল অন্যতম লক্ষ্য। এছাড়া, আসিয়ানের ভূমিকা, বিশেষ করে মালয়েশিয়ার শান্তি মিশন পরিকল্পনা। ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের এই সম্মেলন রোহিঙ্গাদের জন্য এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য চলমান সমস্যার একটি স্থায়ী ও প্রকৃত সমাধান খুঁজে বের করার পথনির্দেশিকা দেওয়ার বড় সুযোগ। 

Advertisement

রোহিঙ্গা সম্মেলন নিয়ে কূটনীতিকদের ব্রিফ করার পর গণমাধ্যমের কাছে এমন আশার কথা জানিয়েছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। ঢাকায় থাকা কূটনীতিকদের ১৭ আগস্ট সকালে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে ব্রিফ করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। ব্রিফিংয়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ দেশ এবং জোট মিলিয়ে ৫০টি মিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।



প্রধান উপদেষ্টা গত বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজনের জন্য সব সদস্য রাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। এই আহ্বানে তাৎক্ষণিকভাবে ও সর্বসম্মতিক্রমে সাড়া পাওয়া যায় এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ এই সম্মেলন আহ্বানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বাংলাদেশ বর্তমানে ১.৩ মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় দিচ্ছে, যাদের বেশির ভাগই ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা। মনে করা হচ্ছে, সম্মেলনটি রোহিঙ্গাদের জন্য এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য এই সমস্যার একটি স্থায়ী ও প্রকৃত সমাধান খুঁজে বের করার পথ দেখাবে। 

আমরা জানি, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোই এ ধরনের সম্মেলনে অংশ নেয়। রোহিঙ্গারা সদস্য নয়। সে কারণে তারা অংশ নিতে পারবে না। কিন্তু কাউকে না কাউকে তো তাদের কথাটা তুলে ধরতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ ধরনের প্রক্রিয়ায় সে কাজটা করছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে যথেষ্ট সাড়া পেয়েছে।



অ্যাকশনএইড ইউকের সহায়তায় ও পিপলস পোস্টকোড লটারির অর্থায়নে সম্প্রতি একটি গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে-কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরগুলোতে যৌন হয়রানি সবচেয়ে ‘বড় উদ্বেগের’ বিষয়। এছাড়া বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ একটি স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা নারী ও কন্যাশিশুদের জন্য অবিলম্বে জেন্ডার-সংবেদনশীল সুরক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা এবং দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের সুপারিশ করা হয়েছে একটি গবেষণা প্রতিবেদনে। 

গবেষণাটি পরিচালনা করে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ। অংশগ্রহণকারীরাও জোর দিয়ে বলেছেন, শিবিরগুলোর ভেতরে নারীদের ও কিশোরীদের জন্য নিরাপদ ও পর্যাপ্ত আলোযুক্ত টয়লেট এবং গোসলের স্থান নিশ্চিত করা, নারী নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেওয়া এবং নারীদের নেতৃত্বে সুরক্ষা কমিটি গঠন করা জরুরি। পাশাপাশি সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রভাব কমাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আরো শক্তিশালী করা এবং আইনি সহায়তা সহজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

রোহিঙ্গা সংকট যখন অনেক বেশি জটিল হয়ে উঠছে, তখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই সংকট সমাধানে সাত দফা প্রস্তাব তুলে ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নিপীড়ন ও বাস্তুচ্যুতি থামাতে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে তা না হলে রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি থেকে সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে। 



প্রধান উপদেষ্টার এই উদ্বেগ এখন প্রকাশ পেলেও প্রকৃতপক্ষে ২০১৭ সালে লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে জোর করে ঠেলে পাঠানো হয়েছিল, তখনই এই উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন পর্যায় থেকে তখন বলা হয়-মিয়ানমার সরকারের অমানবিক ও নিষ্ঠুর এই ভূমিকার কারণে রোহিঙ্গারা ভূমিহীন জাতিতে পরিণত হতে চলেছে।

অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে যে সাত দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন, তার মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গাদের দ্রুত, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য বাস্তবসম্মত রোড ম্যাপ প্রণয়ন, দাতাদের অব্যাহত সমর্থন, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ও আরাকান আর্মির কাছে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও জীবিকা নিশ্চিত করার আহ্বান, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে গঠনমূলক সংলাপ ও অধিকার পুনঃ-প্রতিষ্ঠা, আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা, গণহত্যার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক আদালতে জবাবদিহি ত্বরান্বিত করা।

মিয়ানমারের রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটা বিরাট অংশ ভিটেমাটি ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় এক যুগ পার হয়েছে কিন্তু সমস্যা সমাধানের জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি আন্তর্জাতিক মহল। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় মাতৃভূমিতে দ্রুত, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের রোড ম্যাপ তৈরি করতে হবে। দাতাদের ও মানবিক অংশীদারদের অব্যাহত সহায়তার প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক দাতাদের কাছে আবেদন জানাই, যাতে তারা তাদের অঙ্গীকার বাড়ায় এবং ২০২৫-২৬ সালের যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনার তহবিল ঘাটতি পূরণ করে।’

সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা অপরিহার্য। কারণ এর সঙ্গে জড়িতে রয়েছে চীন, ভারত, আমেরিকার মতো বড় দেশগুলো। ফলে আসিয়ান ও প্রতিবেশী দেশগুলোকে আরও সক্রিয়ভাবে রাখাইন এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে মানব পাচার, মাদক চোরাচালান ও ক্ষুদ্র অস্ত্রের অবৈধ ব্যবসার মতো আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনেও উদ্যোগী হতে হবে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে- ঘরবাড়ি ও ভিটেমাটি ছাড়া রোহিঙ্গাদেরকে নানা রকম অন্যায় ও অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িয়ে ফেলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১৩ লাখ, যা কক্সবাজারকে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থীশিবিরে পরিণত করেছে। প্রতি বছর প্রায় ৩২ হাজার নতুন শিশু রোহিঙ্গা শিবিরে জন্ম নিচ্ছে, অথচ মিয়ানমারে এখন ৫ লাখের কম রোহিঙ্গা রয়েছে। এটি প্রমাণ করে, চলমান নিপীড়নের কারণে তারা মাতৃভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছে। একই সঙ্গে এ কথাও বলা প্রয়োজন যে, দীর্ঘ আট বছরে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণ অসীম ত্যাগ স্বীকার করেছে। এখন আর এত বেশিসংখ্যক রোহিঙ্গার জন্য দেশীয় উৎস থেকে কোনো সম্পদ জোগাড় করা কঠিন। তাই সংকট নিরসনে বৈশ্বিক সহযোগিতা এখন অত্যন্ত জরুরি।

লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট





Source link

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬৪৭

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬৪৭

Next Post
মায়ামির সঙ্গে নতুন চুক্তি করছেন মেসি

মায়ামির সঙ্গে নতুন চুক্তি করছেন মেসি

Advertisement