
এল ক্লাসিকোর উত্তেজনা শুধু স্কোরবোর্ডে সীমাবদ্ধ ছিল না—ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পর পুরো বার্নাব্যু যেন উত্তেজনার ভ্রূণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। ‘রিয়াল মাদ্রিদ চুরি করে আর অভিযোগ করে’—ম্যাচের আগে লামিনে ইয়ামালের এমন মন্তব্য রিয়াল মাদ্রিদকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখিয়েছিল। মাঠে নামার পর সেই উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। বিশেষ করে যখন ইয়ামাল বল স্পর্শ করেন, তখন দর্শকরা বারবার উল্লাস ও আওয়াজের মাধ্যমে তাকে প্রজ্বলিত করছিলেন।
ম্যাচের ফলাফলে রিয়াল মাদ্রিদ জয় পেয়েছে ২-১ ব্যবধানে। তবে বিজয়ী দলের জন্যও শেষ মুহূর্তে উত্তেজনার মাত্রা ভিন্ন মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছিল। ম্যাচের শেষ বাঁশির ঠিক আগে রেফারি সিজার সোটো গ্রাদো বার্সেলোনার মিডফিল্ডার পেদ্রিকে লাল কার্ড দেখান। এরপরই দুই দলের ডাগআউটে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রিয়াল মাদ্রিদের অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে সান্ত্বনা হারালে, প্রথম হলুদ কার্ড তিনি ভিনিসিয়ুসকে ফাউল করার কারণে পেয়েছিলেন।
ডাগআউটে উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে ভিনিসিয়ুস এবং ইয়ামাল। ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়ুসকে কিছুক্ষণ ধরে তর্কে জড়াতে দেখা যায়, পরে রিয়াল তারকা কারভাহাল হাতে ইশারা করে ইয়ামালের দিকে এগিয়ে যান। স্প্যানিশ গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, কারভাহাল বলেছিলেন, ‘তুমি অনেক কথা বলো। এখন বলো দেখি!’ ইয়ামাল এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে থামান রিয়াল মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা।
এরপর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুই দলের অন্যান্য খেলোয়াড়ও সেখানে চলে আসেন এবং হাতাহাতিতে লিপ্ত হন। ভিনিসিয়ুস কিছু আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন ইয়ামালের উদ্দেশ্যে, যার মধ্যে তিনি বলেন, ‘কী ব্যাপার! ব্যাক পাস ছাড়া আর কিছুই তো করলেন না। শুধু ডিফেন্ডারদের কাছে বল দিলেন।’
রেফারির রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশৃঙ্খলার ঘটনায় মোট ছয় জনকে হলুদ কার্ড এবং একজনকে সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয়। হলুদ কার্ডপ্রাপ্ত খেলোয়াড়রা হলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, ফেরান তোরেস, আলেহান্দ্রো বালদে, ফারমিন লোপেজ, রদ্রিগো এবং এদার মিলিতাও। রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিনকে সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয়।
ম্যাচের শেষ পর্বে ইয়ামালের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেও রিয়াল তারকা কারভাহালের জবাব দিতেই যেন যেন মাঠে উত্তেজনার পরিবেশ আরও গরম হয়ে উঠে। কোচ হ্যান্সি ফ্লিকের পরিকল্পনা অনুযায়ী ইয়ামালকে রিয়ালের বিপক্ষে মূল কৌশল হিসেবে দেখা গেল, তবে রাফিনিয়া ও রবার্ট লেভানডফস্কির অনুপস্থিতিতে ইয়ামাল তেমন কিছু করতে পারেননি। ৯০ মিনিটের ম্যাচে মাত্র দুটি শট এবং দুটি সুযোগ তৈরি করতে সক্ষম হন তিনি।
বার্সেলোনা মিডফিল্ডার ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং ম্যাচের উত্তেজনা নিয়ে বলেন, ‘ঠিক কী ঘটেছিল আমি দেখিনি। শুধু দেখলাম অনেক লোক জমেছে। রেফারি বাঁশি বাজানোর পর রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়রা লামিনের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে, এটা একটু বাড়াবাড়ি হয়েছে। বিষয়টা তাদেরই জিজ্ঞেস করা ভালো।’