
টেস্ট ক্রিকেটে নিজের শততম ম্যাচে শতক করা যে কোনো ব্যাটারের জন্য এক মর্যাদাপূর্ণ অর্জন। ইতিহাসে মাত্র দশজন ব্যাটার এই মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। তারা কেবল ব্যাটিং দক্ষতাই নয়, মানসিক দৃঢ়তা এবং ধারাবাহিক পারফরম্যান্সেরও নজির স্থাপন করেছেন।
প্রথম ব্যাটার হিসেবে এই নজির গড়েছিল ইংল্যান্ডের কলিন কাউড্রে। ১৯৬৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শততম টেস্ট খেলতে নেমে এই ব্যাটার করেছিলেন ১০৪ রান। এর দুই দশক পর এই কীর্তি গড়েন পাকিস্তানের জাভেদ মিয়াঁদাদ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বিপক্ষে তার শততম টেস্ট খেলতে নেমে ১৪৫ রান করেন তিনি।
এরপর এই ক্লাবে একে একে প্রবেশ করেন গর্ডন গ্রিনিজ ও অ্যালেক স্টুয়ার্ট। ১৯৯০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের গর্ডন গ্রিনিজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেন ১৪৯ রান। আর তার এক দশক পর ২০০০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের অ্যালেক স্টুয়ার্ট করেন ১০৫ রান।
এরপর ২০০৫ সালে শততম টেস্ট খেলতে নামে পাকিস্তানের ইনজামাম-উল-হক। জাভেদ মিয়াঁদাদের মতো তারও প্রতিপক্ষ ছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। সেদিন এই পাকিস্তানি ব্যাটার ১৮৪ রানে থামেন।
আগের ৫ জন এক ইনিংসে সেঞ্চুরি করলেও নতুন ইতিহাস গড়েন অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং। তিনি ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শততম টেস্টে দুই ইনিংসে শতক (১২০ ও ১৪৩*) গড়ে অনন্য রেকর্ড স্থাপন করেন।
গ্রায়েম স্মিথ ও হাশিম আমলা দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ১০০তম ম্যাচে ধৈর্য ও দৃঢ়তার নজির স্থাপন করেন। স্মিথ ২০১২ সালে শততম টেস্টে ১৩১ রান করেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, আর আমলা ২০১৭ সালে ১৩৪ রান করেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
ইংল্যান্ডের জো রুট ও অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার শততম ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি গড়ে ইতিহাসের নতুন মাত্রা যোগ করেন। ইংল্যান্ডের জো রুট ২০২১ সালে ২১৮ রান করেন ভারতের বিপক্ষে, আর অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার ২০২২ সালে ২০০ রান করেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
শততম ম্যাচে এই কীর্তি ইতিহাসে বিরল ও স্মরণীয়। এই দশজন ব্যাটার তাদের ক্যারিয়ার ও মানসিক দৃঢ়তার প্রতীক হয়ে নাম লিখিয়েছেন। তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য এটি অনুপ্রেরণার উৎস, কারণ এটি দেখায়, শুধু দীর্ঘ ক্যারিয়ার নয়, প্রতিটি ম্যাচই ইতিহাস গড়ার সুযোগ।