
টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্যই এর অনিশ্চয়তা—ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলায়, প্রতিটি সেশনে জাগে নতুন উত্তেজনা। রাওয়ালপিণ্ডি টেস্টও তার ব্যতিক্রম নয়। এখনো বাকি দুই দিন, তবুও এর মধ্যেই পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে টেস্টটা উপহার দিয়েছে রোমাঞ্চকর সব মুহূর্ত ও রেকর্ড।
তৃতীয় দিনের খেলা শেষে পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ৯৪ রান তুলে নিয়েছে। বাবর আজম ৪৯ ও মোহাম্মদ রিজওয়ান ১৬ রানে অপরাজিত আছেন। স্বাগতিকরা এরই মধ্যে ২৩ রানের লিড পেয়েছে।
এর আগে মাত্র ১৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে পাকিস্তান। সেখান থেকে বাবর আজম ও সৌদ শাকিল গড়েন ৪৪ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। যদিও শাকিল ১১ রানে বিদায় নেন সিমোন হামারের বলে, যিনি দিনশেষে ৩ উইকেট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা বোলার।
রাবাদা-মুথুসামির রেকর্ডে বিপর্যয় সামলায় প্রোটিয়ারা
দিনের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকা ছিল ২৩৫ রানে ৮ উইকেটে। সেখান থেকে সেনুরান মুথুসামি ও কাগিসো রাবাদার ব্যাটে তারা তোলে ৪০৪ রান, পায় ৭১ রানের লিড। মুথুসামি খেলেন ৮৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস, অপরাজিত থেকে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি পূর্ণ করেন।
আর রাবাদা তো লিখেছেন ইতিহাস—১১ নম্বরে নেমে ৭১ রানের ইনিংস খেলে গড়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার রেকর্ড। ১৯০৬ সালে আলবার্ট ভোগলারের করা ৬২ রানের রেকর্ডটি ভেঙে দেন তিনি। শুধু তাই নয়, বিশ্ব টেস্ট ইতিহাসে ১১ নম্বরে ব্যাট করে এটিই পঞ্চম সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
আসিফ আফ্রিদির অভিষেকে ইতিহাস
দিনের বড় চমক অবশ্য ছিলেন পাকিস্তানি স্পিনার আসিফ আফ্রিদি। অভিষেকে ৬ উইকেট নেওয়া বাঁহাতি এই স্পিনার ভেঙে দেন ৯২ বছরের পুরনো রেকর্ড। ৩৮ বছর ২৯৯ দিনে অভিষেক হওয়া আসিফই এখন সবচেয়ে বেশি বয়সে অভিষেকে ৫ উইকেট নেওয়া বোলার। ১৯৩৩ সালে এই রেকর্ডটি ছিল ইংল্যান্ডের চালর্স মেরিওটের।
শেষ দুই দিনে নজর বাবর-রিজওয়ানের জুটির দিকে
পাকিস্তান এখন ২৩ রানে এগিয়ে। কিন্তু আরও বড় লিডের জন্য দায়িত্ব নিতে হবে বাবর আজম ও রিজওয়ানকে। প্রথম ইনিংসের মতো যদি হঠাৎ ভেঙে পড়ে পাকিস্তানের লোয়ার অর্ডার, তাহলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যেতে পারে প্রোটিয়াদের হাতে।
টেস্টের বাকি দুদিনে তাই উত্তেজনা, রোমাঞ্চ ও আরও কিছু রেকর্ডের অপেক্ষায় রইল রাওয়ালপিণ্ডি।