
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম সোমবার (১৩ অক্টোবর) নতুন রেকর্ড ছুঁয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা পুনরায় বেড়ে যাওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) সুদের হার কমাতে পারে- এমন প্রত্যাশায় বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণে ঝুঁকেছেন। একইসঙ্গে রুপার দামও ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্তরে ওঠেছে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
জানা যায়, স্পট গোল্ড ১.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি আউন্সে ৪ হাজার ৭৮ ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ডিসেম্বর ডেলিভারির জন্য গোল্ড ফিউচারস ২.৩ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ৯৩ ডলারে উঠেছে।
এর আগে, শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেন এবং নভেম্বরের ১ তারিখ থেকে গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যারের নতুন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দেন। এটি চীনের বিরোধী পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে রোববার চীনা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি যৌক্তিক হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেনি।
ক্যাপিটাল ডট কমের বিশ্লেষক কাইল রড্ডা বলেন, সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্যের ঘটনাগুলো স্বর্ণের বাজারে পূর্বে কম প্রভাব ফেলেছিল। কিন্তু এখন যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য উত্তেজনা নতুন করে বাজারে ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
স্পট রুপার দামও ২.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি আউন্সে ৫১ দশমিক ৭০ ডলারে পৌঁছেছে। স্বর্ণের মতোই রুপার দামও বেড়ে বিনিয়োগ চাহিদা এবং বাজারের সংকীর্ণতার কারণে উর্ধ্বমুখী।
গোল্ডম্যান স্যাকস জানিয়েছে, মধ্যমেয়াদে রুপার দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে স্বল্পমেয়াদে দাম ওঠানামা এবং ঝুঁকি স্বর্ণের তুলনায় বেশি থাকবে।
চলতি বছরের শুরু থেকে স্বর্ণের দাম ৫৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শক্তিশালী গোল্ড ক্রয়, এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডে তহবিল প্রবাহ, ফেডের হার কমানোর প্রত্যাশা এবং শুল্ক সংক্রান্ত অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা।
মার্কেটের বিশ্লেষকরা জানান, অক্টোবর মাসে ২৫ বেসিস পয়েন্টের সুদের হ্রাস এবং ডিসেম্বরেও সমতুল্য হ্রাসের সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত। ফেড চেয়ার জেরোম পাওয়েল মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) এনএবিই- বার্ষিক সভায় বক্তব্য রাখবেন, যা নতুন সুদের হ্রাস ইঙ্গিত দিতে পারে। সপ্তাহজুড়ে অন্যান্য ফেড কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখবেন।
অন্যদিকে ট্রাম্প চলমান সরকারি শাটডাউনের জন্য ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করেছেন। ১ অক্টোবর থেকে শাটডাউন শুরু হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশে দেরি করছে।
এছাড়াও প্ল্যাটিনামের দাম ২.৯ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ছয়শো ৩৫ দশমিক ৩৫ ডলার এবং পেলাডিয়ামের দাম ৩.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৪৫২ দশমিক ৫০ ডলারে পৌঁছেছে।