
রান তাড়ায় প্রায় একাই লড়াই করেছেন। তবু তাওহিদ হৃদয় কমাতে পেরেছেন কেবল হারের ব্যবধান। দলের বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে তাকেই প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসতে হয়েছে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৯ রানে হারের পর প্রথম প্রশ্নই ছিল—এমন পরাজয়ের দিনে সংবাদ সম্মেলনে মুখোমুখি হওয়া কতটা কঠিন?
হৃদয়ের জবাব ছিল শান্ত—তার কাছে বিষয়টি কঠিন মনে হচ্ছে না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ধবলধোলাই, এরপর ঘরের মাঠে আয়ারল্যান্ডের কাছে শুরুতেই ব্যর্থতা—সমালোচনার ঝড় আসবে, তা তিনি জানেন। আর সেই সমালোচনা শোনার ‘অধিকার’ চর্চায় তার আপত্তিও নেই।
তিনি বলেন, সমালোচনা থেকেও ইতিবাচক দিক মিলতে পারে। তবে তার অনুরোধ—সমালোচনা যেন যুক্তিসংগত হয়। অকারণে কোনো বিষয়কে টেনে না বাড়ানোর আহ্বানও জানান তিনি।
হৃদয় যখন এসব কথা বলছিলেন, তিনি নিজে আসলে সমালোচনার মুখে ছিলেন না। দলের ১৪২ রানের মধ্যে একাই করেছেন অপরাজিত ৮৩ রান, যা তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। তাই দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসাটা তার জন্য স্বাভাবিকই ছিল।
ম্যাচ অবশ্য বাংলাদেশের জন্য ছিল কঠিন। লিটন দাসের দল ব্যাট–বলে কোনোভাবেই লড়াই জমাতে পারেনি। আগের সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশের পর নতুন সিরিজের প্রথম ম্যাচেও একই গল্প। তাই নিজের দারুণ ইনিংস সত্ত্বেও হৃদয় জানেন—সমালোচনার চাপ তাকে এড়াবে না।
তিনি বলেন, ‘আপনি আপনার জায়গা থেকে সমালোচনা করবেন, এটা স্বাভাবিক। আপনারা যত ইচ্ছা সমালোচনা করবেন—এটা আপনাদের অধিকার। এখান থেকেও ইতিবাচক কিছু হতে পারে। আপনার দুই–একটা কথায় অনেক কিছু বদলে যেতে পারে।’
তবে একইসঙ্গে শর্তও জুড়ে দেন তিনি—সমালোচনা যেন যুক্তি দিয়ে হয়, এবং যেন অকারণে একটিই প্রসঙ্গ অনবরত টেনে নেওয়া না হয়।
গত কিছুদিনে হৃদয়কে ঘিরেও সমালোচনা কম হয়নি। রান পেলেও ব্যাটিং সাবলীল ছিল না, ইনিংস বড় হচ্ছিল না। বিপিএলে তিনি খেলেন উপরের দিকে; জাতীয় দলে তার ভূমিকা ভিন্ন। এজন্য তার সহজাত ব্যাটিং ব্যাহত হচ্ছে কি না জানতে চাইলে উত্তরে তিনি বলেন, ওপরের দিকে ব্যাটিং করার কোনো জায়গাই এখন নেই তার জন্য। ‘ক্রিকেট তো একার খেলা নয়। আপনারা অনেকে তো ভাবেন, আমি দলে থাকার মতোও নই। তো ভাই, আমি যেখানে আছি, ভালো আছি।’
এ সময় তিনি সতীর্থদের পক্ষেও কথা বলেন—ওপরে যারা খেলছেন, তারা টাচে আছেন এবং পারফর্ম করছেন বলেই দাবি করেন তিনি।
মিডল অর্ডারের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুললে হৃদয় সামগ্রিক উন্নতির কথা বলেন। ‘শুধু মিডল অর্ডার নয়, টপ টু বটম—সব জায়গায়ই উন্নতির প্রয়োজন আছে। উন্নতি হলেই আমরা ভালো কিছু করতে পারব।’
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের ১৮১ রানের জবাবে বাংলাদেশ থামল ৯ উইকেটে ১৪২–এ।