
মাত্র চার মাসের জন্য সৌদি আরবে খেলতে চেয়েছিলেন লিওনেল মেসি। লক্ষ্য ছিল ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখা। কিন্তু তার সেই পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী এই ফুটবলারের প্রস্তাবে দৃঢ়ভাবে ‘না’ বলেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। সৌদি পডকাস্ট থমানিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন মাহদ ট্যালেন্ট ডেভেলপমেন্ট একাডেমির জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল্লাহ হাম্মাদ।
হাম্মাদ বলেন, ‘গত গ্রীষ্মে মেসির টিম আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তারা চেয়েছিল, এমএলএস মৌসুমের চার মাসের বিরতিতে মেসি সৌদি আরবের কোনো ক্লাবে খেলুক। মূল উদ্দেশ্য ছিল ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য ফিট থাকা।’ হাম্মাদ দাবি করেছেন প্রস্তাবটি তিনি ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু সেখানে স্পষ্ট প্রত্যাখ্যান এসেছে।
হাম্মাদের ভাষায়, ‘মন্ত্রী বলেছিলেন, সৌদি প্রো লিগ কোনো প্রস্তুতি বা ট্রেনিং গ্রাউন্ড নয়। প্রতিভাবান ফুটবলারদের আকৃষ্ট করতে ও উচ্চমানের প্রতিযোগিতা গড়ে তুলতে এই লিগ তৈরি হচ্ছে। তাই মেসির চার মাসের অস্থায়ী প্রস্তাবটি গ্রহণযোগ্য নয়।’ হাম্মাদের মতে, তাদের লিগ এখন আর কেবল মার্কেটিংয়ের জন্য নয়। তারা চায় এটি একটি টেকসই ফুটবল ইকোসিস্টেম হয়ে উঠুক। মেসির এই প্রস্তাবটি অনেকটা ডেভিড বেকহামের মতো। লস অ্যাঞ্জেলস গ্যালাক্সিতে খেলার সময় কয়েক মাসের জন্য এসি মিলানে খেলেছিলেন বেকহাম। মেসিও একই পথ ধরতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু সৌদি আরব এবার ভিন্ন পথে হাঁটছে। অস্থায়ী গ্ল্যামার নয়, বরং তাদের চাই স্থায়ী মর্যাদা। কয়েক বছর আগেও সৌদি প্রো লিগকে মনে করা হতো ‘বয়সী তারকাদের শেষ ঠিকানা’। কিন্তু এখন দৃশ্যপট পালটেছে। রোনালদো, নেইমার, বেনজেমা, কান্তেদের মতো তারকাদের আগমনের পর লিগটি এখন বিশ্ব ফুটবলের আলোচনায়। তবে এবার মেসির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সৌদি দেখাল-তারা কেবল তারকাখচিত নয়, আত্মবিশ্বাসীও বটে।
২০২২ সালে আল নাসরে যোগ দেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। পরেই পুরোপুরি বদলে যায় সৌদি ফুটবল। এবার তার চুক্তি নবায়ন হয়েছে ২০২৭ সাল পর্যন্ত। পর্তুগিজ এই মহাতারকা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘আমার পরিবার এখানে সুখে আছে। সৌদি জনগণ আমাদের যেভাবে গ্রহণ করেছে তা অবিশ্বাস্য। আমি শুধু ফুটবলের জন্য নয়, এই দেশের বিকাশের অংশ হতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কিছু প্রমাণ করতে চাই না। আমি এখানে শান্তিতে আছি, ভালোবাসায় আছি। সবাইকে বলবো, নিজে এসে দেখুন।’ অন্যদিকে ২০২৩ সালে পিএসজি ছাড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেন মেসি। সম্প্রতি ক্লাবটির সঙ্গে ২০২৮ সাল পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করেছেন তিনি। তার বার্ষিক আয় প্রায় ১১ মিলিয়ন ইউরো। বোনাসসহ তা বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১৭ মিলিয়ন ইউরো। এর সঙ্গে আছে অ্যাপল ও অ্যাডিডাসের বড় অংশীদারিত্ব। এমনকি এমএলএস-এর স্ট্রিমিং রাজস্বেরও ভাগ পাচ্ছেন তিনি।