
মেক্সিকোর উপসাগরীয় উপকূল ও মধ্যাঞ্চলে একটি ক্রান্তীয় নিম্নচাপের কারণে টানা প্রবল বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৬৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আরও ৬৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন, যাদেরও মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
জাতীয় নাগরিক সুরক্ষা সমন্বয়ক লরা ভেলাসকেজ জানান, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলো হলো হিদালগো ও ভেরাক্রুজ। ভেরাক্রুজে ২৯ জনের মৃত্যু ও ১৮ জন নিখোঁজ এবং হিদালগোতে ২১ জনের মৃত্যু ও ৪৩ জন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই বৃষ্টিপাত এতটা প্রবল হবে, তা আমরা আশা করিনি।’
মেক্সিকোর নৌবাহিনীর সচিব অ্যাডমিরাল রাইমুন্দো মোরালেস জানান, উষ্ণ ও শীতল বায়ুপ্রবাহের সংঘর্ষে এই বন্যা সৃষ্টি হয়, যা নদীগুলোকে উপচে দেয় এবং মাসের পর মাসের বৃষ্টিতে দুর্বল হয়ে পড়া পাহাড়গুলোতে ভূমিধস ঘটায়। এই নামহীন নিম্নচাপটি বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে আঘাত হানে, যখন ভূমি ইতোমধ্যেই মাসের পর মাস বৃষ্টিতে ভিজে ছিল এবং নদীগুলো ছিল উপচে পড়ার মতো পূর্ণ।
এদিকে আবহাওয়াবিদরা প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে সক্রিয় দুটি হারিকেন ও একাধিক ঝড়ের ওপরও নজর রাখছিলেন। বৃষ্টিতে বহু অবকাঠামো যেমন সেতু ধ্বংস হয়েছে এবং রাস্তাগুলো কাদায় ভরে গেছে।
প্রেসিডেন্ট শেইনবাউম জানিয়েছেন, এই দুর্যোগে প্রায় এক লাখ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি গতকাল সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানিয়েছেন, যেখানে পুনর্গঠন কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়া তিনি কিছু সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যও পরিদর্শন করবেন। সরকার জানিয়েছে, হাজার হাজার উদ্ধারকর্মীকে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সরিয়ে নেওয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে।
যে পাঁচটি রাজ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তার বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ ইতোমধ্যে পুনরায় চালু করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, তারা এখন স্থির পানিতে জন্ম নেওয়া মশাবাহিত রোগ যেমন ডেঙ্গুর বিস্তার রোধেও কাজ করছে। গত সপ্তাহে প্রকাশিত ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে উদ্ধারকর্মীরা কোমরসমান পানিতে হেঁটে আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধার করছেন এবং দুর্গত এলাকাগুলোতে খাদ্য ও ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন।
সূত্র: রয়টার্স