
আন্তর্জাতিক জলসীমায় দুটি ভেনেজুয়েলার সামরিক বিমান মার্কিন নৌবাহিনীর একটি জাহাজের ওপর দিয়ে উড়ে গেছে। এই পদক্ষেপকে ওয়াশিংটন ‘অত্যন্ত উস্কানিমূলক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এক বিবৃতিতে ভেনেজুয়েলাকে ‘আরও উস্কানিমূলক পদক্ষেপ’ থেকে দূরে থাকতে সতর্ক করে দিয়েছে।
পেন্টাগন এক্স-পোস্টে জানিয়েছে, ‘আজ মাদুরো সরকারের দুটি সামরিক বিমান আন্তর্জাতিক জলসীমায় একটি মার্কিন নৌবাহিনীর জাহাজের কাছে দিয়ে উড়ে গেছে।’
পোস্টে বলা হয়, মার্কিন সেনাবাহিনীর মাদকবিরোধী ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে বাধা বা হস্তক্ষেপের জন্য আর কোনো প্রচেষ্টা না চালানোর জন্য ভেনিজুয়েলা পরিচালনাকারীদের দৃঢ়ভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমস একজন মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, দক্ষিণ ক্যারিবিয়ান সাগরে গাইডেড-ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী ‘জেসন ডানহাম’-এর ওপর দিয়ে দুটি ভেনেজুয়েলার এফ-১৬ যুদ্ধবিমান উড়ে যায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাদুরোর বিরুদ্ধে মাদক পাচারকারী চক্র পরিচালনা এবং তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার যোগাযোগের অভিযোগ এনেছে। যদিও যুক্তরাষ্ট যোগাযোগের পক্ষে এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
গত আগস্ট মাসে ওয়াশিংটন কোকেন পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মাদুরোকে ‘ধরিয়ে দেওয়ার জন্য’ তথাকথিত পুরস্কার ঘোষণা করে। এর কিছুক্ষণ পরেই যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূলের ক্যারিবিয়ান এবং জলসীমায় বেশ কয়েকটি জাহাজ ও একটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করে।
দক্ষিণ ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌবাহিনী মোতায়েনের বিষয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরেই মাদুরো উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। তিনি বলেছেন, আমেরিকা সামরিক হুমকির মাধ্যমে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন চাইছে।
উত্তেজনার মধ্যেই গত মঙ্গলবার মার্কিন বাহিনী ক্যারিবীয় অঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়ে একটি স্পিডবোট ধ্বংস করেছে। ট্রাম্পের ভাষ্য, নৌকাটি মাদুরোর সঙ্গে জড়িত একটি অপরাধী সংগঠনের ছিল এবং হামলায় ১১ জন নিহত হয়েছেন।
এরপর ভেনেজুয়েলা ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনেছে। আইন বিশেষজ্ঞরাও এই হামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কারণ ট্রাম্প প্রশাসন এমন কোনো প্রমাণ দেয়নি যে, জাহাজে থাকা ব্যক্তিদের কাছ থেকে ‘আসন্ন হুমকির’ ছিল। এমনকি নৌকায় থাকা ব্যক্তিরা সশস্ত্র ছিল কিনা, তাও জানা যায়নি।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অনেকের দৃষ্টিতে নৌকায় থাকা ব্যক্তিরা বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। এই আক্রমণকে মার্কিন বাহিনীর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে দেখা হবে।