
তিন বছর আগের কথা মনে করিয়ে দিলেন বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা। ঢাকায় প্রীতি ম্যাচে মালয়েশিয়াকে বাংলাদেশ হারিয়েছিল ৬-০ গোলে। সেই ম্যাচের প্রতিশোধই নিয়ে গেলেন এখনকার মালয়েশিয়ান ফুটবলাররা। দারুণ একটা জয় উপহার দিয়েছেন তাদের দেশকে। গতকাল রাতে জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ০-১ গোলে হেরেছে মালয়েশিয়ার কাছে।
২৮ মিনিটে নূর আনিশাহ বিনতি মুরাদের অসাধারণ গোলটা মালয়েশিয়াকে টুর্নামেন্টের প্রথম জয় তুলে দিয়েছে। আরও ১ ম্যাচ খেলতে হবে আজারবাইজানের বিপক্ষে, আমন্ত্রণমূলক তিন জাতির সিরিজে। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ যে খেলাটা খেলেছে তাতে মন ভরায়নি। বাংলাদেশের ইংলিশ কোচ পিটার বাটলার হাই ডিফেন্স লাইন পরিকল্পনায় খেলতে গিয়েও পারেননি। পালটা আক্রমণে রক্ষণভাগ সামাল দিতে পারবে কি না, সেটি মাথায় রাখেননি কোচ।
মালয়েশিয়ার বিপক্ষে শুরুতেই খেলাটা বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে ছিল। মালয়েশিয়া পুরো ম্যাচটা বুঝে ওঠার জন্য সময় নিয়েছে। সামসুন নাহার, মারিয়া মান্দা, মুনকি আক্তার, ঋতুপর্ণা চাকমা, কোহাতি কিসকু, আক্রমণের বন্যা বইয়ে দিলেন। কিন্তু গোলের খাতা খুললো মালয়েশিয়া। মালয়েশিয়ান গোলরক্ষক নুরুল আজুরিন বিনতি মাজিয়ানকে একটি বারও বিপদে ফেলতে পারেনি। পালটা আক্রমণে বাংলাদেশকে বোকা বানিয়ে বল ঠেলে দিয়েছে জালে।
গোলরক্ষক রূপনা চাকমা বক্স ছেড়ে বাইরে এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন, বারবার। ডিফেন্ডার আফঈদা খন্দাকারকে কাটিয়ে নিয়ে রূপনা চাকমাকে ফাঁকি দিয়ে পেছনে ফাঁকা পোস্টে বল গড়িয়ে নেন নূর আনশাহ বিনতি মুরা, ১-০। ম্যাচের ৬২ মিনিটে করা গোলটা ধরে রাখে মালয়েশিয়া।
গোল হজম করে পিটার বাটলার মামুনি চাকমা, জয়নব বিবি, স্বপ্না রানী, তহুরা, সাগরিকারা মাঠে নামান, আক্রমণে তেজ বাড়ালেও গোলের দেখা পাননি।
ঋতুপর্ণা চাকমা, তহুরা খাতুনের সঙ্গে ওয়ালপাস করে ক্রস করেছিলেন। সাগরিকা মাথা লাগিয়েছেন, কিন্তু বল গেল বাইরে। এই ম্যাচে ফেরার একটাই সহজ সুযোগ হাতছাড়া হয়। এরপরও বাংলাদেশ আক্রমণ করেছিল। কিন্তু মালয়েশিয়ার গোলরক্ষক মাজলানকে টলাতে পারেনি। এই গোলরক্ষক অসাধারণ দক্ষতায় তার পজিশন জ্ঞান দিয়ে খেলেছেন। কোন বলে ফ্লাইটে যেতে হবে সেটি খুব ভালো জানেন তিনি।
সেই তুলনায় বাংলাদেশের রূপনা চাকমা সাফের সেরা গোলরক্ষক হয়েও তিনি বাজে ফুটবল খেলেছেন। গোলের জন্য তাকেই দোষ দেওয়া হচ্ছে। শেষ দিকে তো বাংলাদেশের রূপনা চাকমাকে একা পেয়েও মালয়েশিয়া গোল করতে পারেনি। কোচ পিটার বাটলার পরীক্ষানিরীক্ষা করেছেন, যেটা করেননি মালয়েশিয়ার ব্রাজিলিয়ান কোচ জোয়েল কমেলি। তিনি পুরো পরিকল্পনাটা তার মতো করে বাস্তবায়ন করে গেছেন, সফলতা পেয়েছেন। বলেছেন, ‘বাংলাদেশ হাইলাইন ডিফেন্স খেলেছিল, সেটারই সুযোগ নিয়েছি আমরা।’
পিটার বাটলার আগেই জানিয়েছিলেন এই টুর্নামেন্টে তিনি ফল খুঁজছেন না। তার কাছে দলটা প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে ম্যাচ হেরে সব দায়িত্ব কোচ তার কাঁধে নিয়েছেন। কোচ যে কথাই বলুক, খেলা মনে ধরাতে পারেনি। ৪ ম্যাচে ২ জয় ১ হার ১ ড্র করলো। অন্যদিকে বাংলাদেশের টানা তৃতীয় হার। থাইল্যান্ডের কাছে ৩-০ ও ৫-১ গোলে প্রীতি ম্যাচে হেরে ঘরে ফিরেছিল বাংলাদেশ। ঢাকা স্টেডিয়ামে খেলে টানা ৭ ম্যাচ হারলো বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এশিয়ান কাপে অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে যাবে। তার আগে প্রস্তুতি হিসাবে তিন জাতির টুর্নামেন্ট খেলছে বাংলাদেশ।