
ভেনেজুয়েলায় হামলা চালানোর কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও দেশটির আশপাশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে— ওয়াশিংটন যেন কারাকাসে সরকার পরিবর্তনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় সাগরে নৌবাহিনীর আটটি জাহাজ মোতায়েন করেছে। পুয়ের্তো রিকোতে পাঠানো হয়েছে রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, আর অঞ্চলটির দিকে রওনা দিয়েছে বিমানবাহী রণতরীর একটি স্ট্রাইক গ্রুপ। ওয়াশিংটনের দাবি, এই বিপুল সামরিক শক্তি মোতায়েনের লক্ষ্য সরকার পরিবর্তন নয়, বরং মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ।
শুক্রবার প্রেসিডেন্টকে বহনকারী এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প সংক্ষিপ্তভাবে বলেন, ‘না।’ প্রশ্ন ছিল, তিনি কি ভেনেজুয়েলায় হামলার কথা ভাবছেন? ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওও একই বার্তা দিয়েছেন।
মায়ামি হেরাল্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াশিংটনের বাহিনী ভেনেজুয়েলাকে লক্ষ্য করে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ বিষয়ে রুবিও এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘আপনার তথাকথিত “সূত্র” আপনাকে ভুয়া খবর লিখতে বাধ্য করেছে।’
গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চল ও পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে কথিত মাদক চোরাচালানে জড়িত নৌযান লক্ষ্য করে হামলা অভিযান শুরু করে। ওই অভিযানে অন্তত ৬২ জন নিহত হয়েছেন, ধ্বংস হয়েছে ১৪টি নৌযান ও একটি আধা-ডুবোজাহাজ।
ওয়াশিংটন দাবি করছে, এসব ছোট নৌযান যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি এবং মাদক চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিযানের ধরন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সমতুল্য, এমনকি যদি লক্ষ্যবস্তু সত্যিই মাদক পাচারকারীও হয়।
এদিকে অঞ্চলটিতে সামরিক শক্তি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র বি-৫২ ও বি-১বি মডেলের বোমারু বিমান ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছাকাছি চক্কর দিয়েছে। সর্বশেষ সোমবার সেসব বিমানকে উড়তে দেখা গেছে।
এই অবস্থায় ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো অভিযোগ করেছেন, ওয়াশিংটন তাঁর সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে এবং ‘কৃত্রিম যুদ্ধ পরিস্থিতি’ তৈরি করছে।