
ভেনিজুয়েলায় স্থল অভিযান চালানোর বিষয়টি বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি ভেনিজুয়েলায় গোপন অপারেশন চালাতে সিআইএকে অনুমোদন দিয়েছেন।
ট্রাম্পের অভিযোগ, ভেনিজুয়েলা সমুদ্রপথে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচার করছে। গত সপ্তাহে পঞ্চম বারের মতো দেশটির উপকূলীয় এলাকায় একটি নৌযানে হামলা চালায় ওয়াশিংটন। এতে ছয় জন নিহত হয়। এ নিয়ে মার্কিন হামলায় নিহতের সংখ্যা ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরো জানান, তার প্রশাসন ভেনিজুয়েলার ভেতরে স্থলভিত্তিক সামরিক অভিযান চালানোর বিষয়টিও বিবেচনা করছে। গত কয়েক সপ্তাহে ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনিজুয়েলার নৌযানে প্রাণঘাতী মার্কিন হামলার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্পকে সাংবাদিকরা সরাসরি জিজ্ঞেস করেন, আপনি কেন সিআইএকে ভেনিজুয়েলায় পাঠানোর অনুমতি দিলেন? জবাবে ট্রাম্প বলেন, দুটি কারণ আছে। প্রথমত, তারা (ভেনিজুয়েলা) তাদের জেলখানার বন্দিদের যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে। দ্বিতীয়ত, ভেনিজুয়েলা মাদক পাচারের বড় উত্স। তিনি আরো বলেন, ভেনিজুয়েলা থেকে প্রচুর পরিমাণে মাদক যুক্তরাষ্ট্রে আসে, বিশেষত সমুদ্রপথে। আমরা সমুদ্রপথে তা বন্ধ করছি, এবার স্থলপথেও থামাব।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন অভিযানের ইঙ্গিত দেয়। দুই দেশের নেতাই সম্প্রতি ক্যারিবিয়ান সাগরে সামরিক প্রস্তুতি জোরদার করেছেন, যা সম্ভাব্য সংঘর্ষের আশঙ্কা বাড়িয়েছে।
এদিকে ট্রাম্পের মন্তব্য ও সিআইএ অভিযানের অনুমোদনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মাদুরো সরকার। এক বিবৃতিতে দেশটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এসব পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের সরাসরি লঙ্ঘন। এর লক্ষ্য ভেনিজুয়েলায় শাসন পরিবর্তনের বৈধতা তৈরি করা এবং দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, সিআইএ কি মাদুরোকে অপসারণের অনুমতি পেয়েছে?’ ট্রাম্প জবাবে বলেন, ‘আমি এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি না। এটা আমাকে করার মতো প্রশ্ন নয়, যদিও প্রশ্নটা অযৌক্তিক নয়, তবে আমার পক্ষে এমন কিছু বলা অযৌক্তিক হবে।
শেষে তিনি যোগ করেন, আমি শুধু এটুকু বলব, ভেনিজুয়েলা এখন চরম চাপ অনুভব করছে। ট্রাম্প প্রশাসন চলতি বছরের শুরু থেকেই ল্যাটিন আমেরিকায় ‘ওয়ার অন টেরর’ নীতিকে নতুনভাবে প্রয়োগের ঘোষণা দেয়, যার অংশ হিসেবে মাদক পাচার ও অপরাধ দমনে সামরিক অভিযান জোরদারের কথা বলা হয়। কিন্তু বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপগুলো আসলে ভেনিজুয়েলায় শাসন পরিবর্তনের অজুহাত, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা অর্জনে গুরুতর হুমকি তৈরি করতে পারে।