
কয়েক দিনের টানা ভারী বৃষ্টিতে ভারতের কলকাতা এবং আশপাশের এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে তিনজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মৃত্যুর ঘটনা বেনিয়াপুকুর, কালিকাপুর, নেতাজি নগর, গড়িয়াহাট, ইকবালপুর, বেহালা এবং হরিদেবপুরসহ শহরের বিভিন্ন অংশে ঘটেছে।
প্রচণ্ড বৃষ্টিতে কলকাতার বিভিন্ন স্থানে যানবাহন চলাচল, মেট্রো এবং শহরতলির ট্রেন পরিষেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। নিচু এলাকায় অনেক বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে এবং ব্যাপক সম্পত্তি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কয়েকটি স্কুল ইতোমধ্যেই ছুটি ঘোষণা করেছে।
কলকাতা পৌরসভার তথ্যানুযায়ী, শহরের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টির প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। গড়িয়া কামদাহারি এলাকায় কয়েক ঘণ্টায় ৩৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া যোধপুর পার্কে ২৮৫ মিলিমিটার, কালীঘাটে ২৮০ মিলিমিটার, তোপসিয়ায় ২৭৫ মিলিমিটার এবং বালিগঞ্জে ২৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একটি নিম্নচাপের প্রভাবে এই ভারী বৃষ্টি হচ্ছে এবং আরও বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।
দুর্গাপূজার কয়েক দিন আগে এই টানা বৃষ্টিপাত শহরের উৎসবের প্রস্তুতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। বেশিরভাগ পূজামণ্ডপ প্রায় প্রস্তুত থাকলেও এখন আয়োজকদের মূল চ্যালেঞ্জ হলো মাসব্যাপী শ্রমে তৈরি মণ্ডপগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা।
এদিকে, জলমগ্ন রাস্তায় আটকে পড়ছেন বিমানবন্দরে ফ্লাইট ধরতে আসা যাত্রীরা। এয়ার ইন্ডিয়া এবং ইন্ডিগো তাদের যাত্রীদের সতর্কবার্তা দিয়ে জানিয়েছে, ফ্লাইট বিলম্বিত হতে পারে। এমনকি রানওয়েতেও পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। দুই এয়ারলাইন্স যাত্রীদের ফ্লাইটের অবস্থা আগে থেকে জেনে নিতে এবং যানজট এড়াতে অতিরিক্ত সময় হাতে নিয়ে যাত্রা করার পরামর্শ দিয়েছে।
কলকাতার মেয়র এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, তিনি জীবনে কখনো এ ধরনের জলমগ্ন পরিস্থিতি দেখেননি। তবে তিনি আশাবাদী, নতুন করে আর বৃষ্টি না হলে রাতের মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এদিকে, ক্যালকাটা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন (সিইএসসি) নাগরিকদের জলাবদ্ধ রাস্তায় বিদ্যুতের তার বা খুঁটির কাছ থেকে দূরে থাকার সতর্কবার্তা দিয়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি