
ক্রস-বর্ডার উত্তেজনার জেরে ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জুনিয়র হকি বিশ্বকাপ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তান। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশনকে এই সিদ্ধান্ত জানায় পাকিস্তান হকি ফেডারেশন। আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতের চেন্নাই ও মাদুরাইয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে এই প্রতিযোগিতার।
পাকিস্তান ছিল ‘গ্রুপ বি’-তে। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে ছিল ভারত, চিলি ও সুইজারল্যান্ড। এখন সেই জায়গায় কোন দল খেলবে, তা শিগগিরই ঘোষণা করবে আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশন। তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আমরা নিশ্চিত করছি যে পাকিস্তান হকি ফেডারেশন জানিয়েছে, তাদের দল এই টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে না। শিগগিরই পাকিস্তানের পরিবর্তে নতুন দলের নাম ঘোষণা করা হবে।’
পাকিস্তানের সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণ দুই দেশের চলমান রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক টানাপড়েন। এ বছরের ২২ এপ্রিলের পেহেলগাম হামলা এবং ভারতের পালটা অভিযান অপারেশন সিঁদুরের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক একেবারেই ঠান্ডা। এরপর থেকেই ভারত-পাকিস্তানের ক্রীড়া সম্পর্ক আরও তিক্ত। ভারতের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, তারা দ্বিপক্ষীয় খেলায় অংশ নেবে না। তবে বহুজাতিক ইভেন্টে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।
পাকিস্তান হকি ফেডারেশনের মহাসচিব রানা মুজাহিদ আলি বলেছেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতে গিয়ে খেলা সম্ভব নয়। সাম্প্রতিক এশিয়া কাপ ক্রিকেটেই দেখা গেছে, ভারতের খেলোয়াড়রা আমাদের সঙ্গে হাত মেলাতে রাজি ছিলেন না। এমনকি ফেডারেশনের প্রধান মহসিন নাকভির কাছ থেকে ট্রফিও নেননি। এমন নেতিবাচক পরিবেশে আমরা খেলোয়াড়দের পাঠাতে পারি না।’
পাকিস্তান চায় নিরপেক্ষ ভেন্যু। ‘আমরা আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশনকে অনুরোধ করেছি যেন নিরপেক্ষ মাঠে ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ দেয়। ভারতের কারণে আমাদের তরুণরা বারবার বড় টুর্নামেন্ট থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এতে আমাদের হকির উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
অন্যদিকে হকি ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তারা এখনো পাকিস্তানের সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক নোটিশ পায়নি। সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ভোলানাথ সিং বলেন, ‘আমি দেড় মাস আগে পাকিস্তান কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারা তখন অংশ নেওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত করেছিল। এখন কী পরিবর্তন হলো জানি না। আমাদের দায়িত্ব সেরা আয়োজন করা। পাকিস্তান খেলুক বা না খেলুক।’ এই প্রতিযোগিতায় পাকিস্তানের না আসা আন্তর্জাতিক হকির জন্যও বড় ধাক্কা।