
চলমান নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় জয় পায় ভারত। রোববার (৫ অক্টোবর) ৮৮ রানের বড় ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে হারমানপ্রীত কৌরের দল। তবে সেই ম্যাচে পাকিস্তানি ব্যাটার মুনিবা আলীর রানআউট নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক। তাকে তৃতীয় আম্পায়ার রানআউট ঘোষণা করলেও মেনে নিতে পারেনি পাকিস্তান। এবার মুনিবার রানআউটের ব্যাখ্যা দিয়েছে ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)।
ভারতের ২৪৭ রান তাড়া করতে নেমে ইনিংসের চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে মুনিবাকে হারায় পাকিস্তান। তৃতীয় আম্পায়ার তাকে রানআউট আউট দেওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ জানান পাক অধিনায়ক ফাতিমা সানা।
তবে এমসিসি মনে করে, ম্যাচে তৃতীয় আম্পায়ার দক্ষিণ আফ্রিকার কেরিন ক্লাস্তে মুনিবার বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তই দিয়েছেন। অর্থাৎ রানআউটের সিদ্ধান্তকে সঠিক হিসেবে রায় দিয়েছে এমসিসি। এর ব্যাখ্যাও দিয়েছে সংস্থাটি।
ভারতের পেসার ক্রান্তি গৌরের এক ডেলিভারি মুনিবার প্যাডে লাগলে ফিল্ডাররা এলবিডব্লিউর আবেদন জানান। অন-ফিল্ড আম্পায়ার সেই আবেদন নাকচ করে দেন। এ সময় ক্রিজের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন মুনিবা। তার ব্যাটও তখন দাগের ভেতরে ছিল না। এমন মুহূর্তে ভারতীয় ফিল্ডার দীপ্তি শর্মা সরাসরি থ্রো করে ভেঙে দেন স্টাম্প। সঙ্গে সঙ্গেই আবেদন করা হয় রানআউটের।
তৃতীয় আম্পায়ার ভিডিও রিপ্লে দেখে নিশ্চিত হন, বল স্টাম্পে লাগার সময় মুনিবার ব্যাট বাতাসে ছিল, আর তিনি নিজেও ছিলেন ক্রিজের বাইরে। ফলে তৃতীয় আম্পায়ার তাকে রানআউট ঘোষণা করেন। তবে এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি পাকিস্তান দল। ডাগআউটে থাকা পাকিস্তানের অধিনায়ক ফাতিমা সানা ম্যাচের চতুর্থ আম্পায়ারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।
একপর্যায়ে ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে থাকা মুনিবাকে বাউন্ডারি লাইনের ভেতরে থাকতে বলেন ফাতিমা। বিষয়টি নিয়ে নিজেদের ওয়েবসাইটে দেওয়া ব্যাখ্যায় এমসিসি বলেছে, আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত একদম সঠিক ছিল।
এমসিসি এই আউটের ব্যাখ্যায় বলেছে, অনেকে ৩০.১.২ ধারা টেনে দাবি করছেন মুনিবা আউট ছিল না; কারণ, কয়েক মুহূর্ত আগেই তিনি ক্রিজে ব্যাট রেখেছেন। কিন্তু এ আইন শুধু ব্যাটারের ‘দৌড়ানো ও ডাইভ দেওয়া’র সময় কার্যকর।
এমসিসির ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘২০১০ সালে চালু হওয়া এই আইনটি, যেটি “বাউন্সিং ব্যাট ল” নামেও পরিচিত, তা ব্যাটারকে রক্ষা করে কেবল তখনই, যখন তারা দৌড়ানোর সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে ব্যাট মাটি থেকে ওঠে যায় বা দুই পা বাতাসে উঠে যায়। কিন্তু মুনিবার ক্ষেত্রে তা হয়নি। তিনি নিজেই ব্যাট তুলেছিলেন, ক্রিজের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন।’
এমসিসি তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া ব্যাখ্যায় আরও বলেছে, ‘এখানে আইনের কয়েকটি দিক বিবেচনার আছে। প্রথম ও সবচেয়ে সহজ বিষয় হলো—জোরালো এলবিডব্লিউ আবেদন মানেই বল “ডেড” হয়ে গেছে, এমনটা নয়। আম্পায়ার আবেদনটি নটআউট ঘোষণা করেছেন, বল তখনো উইকেটকিপারের হাতে পুরোপুরি থিতু হয়নি, আর দীপ্তির কার্যক্রমই (থ্রো করা) বুঝিয়ে দেয়, সব খেলোয়াড় বলটিকে “ডেড” মনে করেননি। তাই বল তখনো খেলার মধ্যে ছিল।’
ক্রিকেটের আইন অনুযায়ী- ব্যাটার আউট হবেন, যদি বল খেলার মধ্যে থাকাকালীন সময়ে তিনি ক্রিজের বাইরে অবস্থান করেন এবং কোনো ফিল্ডারের কার্যক্রমে তার উইকেট ভাঙা হয়। উল্লেখ্য, নারী বিশ্বকাপে আগামীকাল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে পাকিস্তান। আর আগামী বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে ভারত।