
ওয়ানডে ক্রিকেট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসার কথা ছিল ভারতের। তারা আসেনি। ক্রিকেট দল না এলেও এর মধ্যে ভারতীয় একাধিক দল বাংলাদেশে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট খেলে গেছে। বড় আকর্ষণ হচ্ছে ফুটবল দল। ভারতীয় ফুটবল দল আসছে বাংলাদেশে। এশিয়ান কাপ ফুটবলে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে ভারতের ঢাকায় আসার তারিখ চূড়ান্ত।
আগামী ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশে পা রাখবে ভারতীয় ফুটবল দল। ১৮ নভেম্বর ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে রাত ৮টায় বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলা। খেলার চার দিন আগে ঢাকায় আসতে চায় ভারত। ঢাকায় এসে এখানকার পরিবেশে পুরোদমে অনুশীলন করার প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা গেছে। প্রথমে তাদের পরিকল্পনা ছিল ম্যাচের আগে একদিন অনুশীলন করবে। পরে তারা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। কোচ খালিদ জামালি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন-হাতে সময় নিয়ে তারা বাংলাদেশে আসবেন।
এরই মধ্যে বাফুফের কাছে একটা তালিকা পাঠিয়েছে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ)। প্রায় ৫০ জনের প্রাথমিক তালিকা পাঠিয়েছে। জানা গেছে সেই তালিকায় সুনীল ছেত্রীর নাম নেই। তার পরও তালিকায় পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ভারত থেকে পাঠানো তালিকায় ভারতে বাংলাদেশি দূতাবাসে পাঠানো হয়েছে ভিসার জন্য। ভারতীয় ফুটবল দল ১৫ নভেম্বর এসে ১৯ নভেম্বর চলে যাবে। এই পাঁচ দিনের জন্য ভারতের জন্য কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা রাখার আলোচনা হয়েছে। বাফুফে সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে কথা হচ্ছে।
২৩ বছর পর বাংলাদেশে আসছে ভারতীয় সিনিয়র ফুটবল দল। ২০০৩ সালে ঢাকায় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ হয়েছিল ঢাকায়, বাংলাদেশ প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়। সেই সাফে বাংলাদেশের কাছে সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছিল ভারত। এরপর ভারত কয়েকবার এলেও অনূর্ধ্ব-২৩ দল পাঠিয়েছিল সাফে।
২০২৩ সালে এশিয়ান কাপ ফুটবলের বাছাইয়ে খেলতে বাংলাদেশ গিয়েছিল ভারতে। সেই ম্যাচে সুনীলের জোড়া গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। ফিরতি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশে আসার কথা ছিল ভারতের। কিন্তু তখন করোনার কারণে আসতে পারেনি। পরবর্তী সময় ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচসহ একাধিক খেলা হয়েছিল কাতারে। এএফসি কাতারে খেলার আয়োজন করেছিল। এবারের এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বাংলাদেশ ও ভারত এরই মধ্যে বিদায় নিয়েছে। তার পরও দুই দেশের ম্যাচ কেন্দ্র করে উত্তেজনার পারদ পরতে পরতে থাকবে।
গত ২৫ মার্চ ভারতের শিলংয়ে বাংলাদেশ-ভারত প্রথম ম্যাচ খেলেছিল এশিয়ান কাপের খেলায়। গোলশূন্য ছিল সেই ম্যাচ। এবার ফিরতি ম্যাচ। এই ম্যাচের রেজাল্ট বাড়তি সুবিধা দেবে না, তবে দুই দেশের ফুটবলের জন্য মর্যাদার লড়াই এটি। এ ম্যাচের টিকিট চাহিদাও ব্যাপক। ফাহমিদুল খেলবেন না, তার নামে দুই হলুদ কার্ড। তবে হামজা চৌধুরী চলে আসবেন বড় ম্যাচ খেলতে। তাকে ঘিরেই মূলত এখন বাংলাদেশের দর্শকের আগ্রহ বেশি।
বাংলাদেশ যখন ভারতে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে গিয়েছিল তখন নানা সমস্যার মুখোমুখি হয়ে ছিল ফুটবল দল। যদিও জামাল ভূঁইয়ারা নির্ধারিত সময়ের আগেই শিলংয়ে মূল ভেন্যুতে চলে গিয়েছিলেন। তারপরও নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেছিলেন বাংলাদেশের ফুটবল কর্তারা। সেসব আর মনে রাখতে চায় না কেউ। ফুটবল খেলতে গেলে নানা কিছু ঘটে। সেগুলো ভুলে গিয়ে নতুন করে শুরু করতে হয়- এমন কথা বলেছেন জাতীয় ফুটবল দলের ম্যানেজার আমের খান।
ভারতকে আতিথেয়তা দিতে প্রস্তুত বাফুফে। সভাপতি তাবিথ আউয়ালের কথা হচ্ছে একটা দেশ যখন খেলতে আসবে তারা যেন কোন দিক থেকে মন খারাপ না করতে পারে। যেভাবে ভারত সহযোগিতা চাইবে সেটাই করার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে বাফুফের। দুই দেশের ফুটবল ম্যাচের সুন্দর আয়োজন বাংলাদেশের ফুটবল ইমেজ বৃদ্ধি করবে-এমনটাই মনে করেছেন তাবিথ আউয়াল। এরই মধ্যে ভারত থেকে একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসে ম্যাচ ভেন্যু ঘুরে দেখেছে, হোটেল দেখেছে, কোথায় অনুশীলন করবে সেটিও দেখেছে। উত্তরায় পুলিশের মাঠ এবং বুয়েট মাঠ দেখে গেছে প্রতিনিধি দল।
ভারত ঢাকায় আসার আগে নেপাল ফুটবল দল আসছে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলতে। নেপালের কোচ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সাবেক ফুটবলার হড়িখাড়কে। নেপাল আসবে ১০ নভেম্বর। ১৩ নভেম্বর জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলা। নেপালের বিপক্ষে হামজা চৌধুরী খেলবেন, তিনি ১০ নভেম্বর ঢাকা আসবেন। সামিত সোম আসতে পারবেন কিনা নিশ্চিত না। তবে ভারতের বিপক্ষে খেলবেন সামিত।