
ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস তার ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রুর উপাধি ও রাজকীয় মর্যাদা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। পাশাপাশি অ্যান্ড্রুকে রয়্যাল লজ প্রাসাদ ছেড়ে যাওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এমন তথ্য জানিয়েছে বাকিংহাম প্যালেস।
৬৫ বছর বয়সী প্রিন্স অ্যান্ড্রু সম্প্রতি প্রয়াত ভার্জিনিয়া গিফ্রের আত্মজীবনী ‘নোবডিস গার্ল’ প্রকাশের পর নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়েন। গিফ্রে বইটিতে অভিযোগ করেন, অ্যান্ড্রু তার কিশোর বয়সে যৌন নির্যাতন করেছিলেন। গিফ্রে ছিলেন দোষী সাব্যস্ত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টাইনের ঘনিষ্ঠজন। এপস্টাইনের সঙ্গে বন্ধুত্বের কারণেও অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে সমালোচনা বৃদ্ধি পায়। যদিও অ্যান্ড্রু বারবার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন।
বাকিংহাম প্যালেস এক বিবৃতিতে জানায়, মহামান্য রাজা আজ প্রিন্স অ্যান্ড্রুর উপাধি ও সম্মান প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এখন থেকে তিনি অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইন্ডসর নামে পরিচিত হবেন। প্রাসাদ ছাড়ার জন্য তাকে আনুষ্ঠানিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
রাজকীয় সূত্রে জানা গেছে, অ্যান্ড্রু রাজা চার্লসের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন স্যান্ড্রিংহাম এস্টেটের একটি বাসভবনে চলে যাবেন। এ ব্যয় ব্যক্তিগতভাবে রাজা বহন করবেন।
যদিও অ্যান্ড্রু অভিযোগ অস্বীকার করে চলেছেন, রাজ প্রাসাদ জানিয়েছে- তার আচরণে গুরুতর বিচারের ত্রুটি রয়েছে—এ কারণেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তবে উপাধি প্রত্যাহারের পরও অ্যান্ড্রু ব্রিটিশ সিংহাসনের অষ্টম উত্তরাধিকারী হিসেবে থাকছেন। আইন অনুযায়ী এই মর্যাদা প্রত্যাহারে কমনওয়েলথ দেশগুলোর অনুমোদন প্রয়োজন, যা সময়সাপেক্ষ একটি প্রক্রিয়া।
অ্যান্ড্রুর পদবি ডিউক অব ইয়র্ক, আর্ল অব ইনভারনেস ও ব্যারন কিলিলেঘ— সবই প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি ‘রয়েল ভিক্টোরিয়ান অর্ডার’ ও ‘অর্ডার অব দ্য গার্টার’-এর সদস্য হিসেবেও আর থাকবেন না।
প্যালেস এক বিবৃতিতে জানায়, তাদের ম্যাজেস্টিরা নির্যাতনের শিকার ও বেঁচে থাকা সকলের প্রতি গভীর সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন।
এর আগে অ্যান্ড্রু নিজ পদবি ব্যবহার বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে সেই পদক্ষেপ বিতর্ক কমাতে ব্যর্থ হয়। তিনি ২০২২ সালে গিফ্রেকে কয়েক মিলিয়ন ডলারের নিষ্পত্তি দিয়েছিলেন। এ ঘটনায় রাজপরিবারের সদস্য হয়েও তার আর্থিক উৎস নিয়ে নতুন প্রশ্ন উঠেছে।
অ্যান্ড্রুর প্রাক্তন স্ত্রী সারা ফার্গুসনও রয়্যাল লজ ছাড়বেন বলে জানা গেছে। তাদের দুই কন্যা—প্রিন্সেস বিট্রিস ও ইউজেনি—তাদের রাজকুমারী খেতাব ধরে রাখবেন।
রাজা চার্লসের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে ব্রিটিশ সরকারকে অবহিত করা হয়েছে এবং তারা পদক্ষেপটিকে সমর্থন জানিয়েছে।
ইতিহাসে শেষবার কোনো রাজপুত্রের উপাধি প্রত্যাহার করা হয়েছিল ১৯১৭ সালে, যখন প্রিন্স চার্লস এডওয়ার্ড প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পক্ষে লড়াই করার কারণে ‘ডিউক অব আলবানি’ খেতাব হারান।
 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	 
	