
বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমছে, যার পেছনে প্রধান কারণ হলো ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলোর উৎপাদন বাড়ানোর সম্ভাবনা।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রয়টার্স বার্তা সংস্থার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ০.৭% কমে ৬৭.১৪ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দাম ০.৭% কমে ব্যারেলপ্রতি ৬৩.৫০ মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে।
বিনিয়োগকারী এবং ব্যবসায়ীরা এখন ওপেক প্লাসের আসন্ন বৈঠকের দিকে নজর রাখছেন, যেখানে উৎপাদন আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এনজেড রিসার্চের এক নোটে বলা হয়েছে, যদি ওপেক প্লাস বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে বাজারে আরও তেল ছাড়ে, তবে ব্রেন্ট তেলের দাম নতুন করে চাপের মুখে পড়বে। এতে বাজারে তেলের উদ্বৃত্ত আরও বেড়ে যেতে পারে, বিশেষ করে যখন চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম থাকে।
ওপেকভুক্ত দেশ এবং তাদের মিত্রদের (ওপেক প্লাস) আট সদস্য আগামী রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বৈঠকে বসবে। এই বৈঠকের সঙ্গে জড়িত দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, বৈঠকে অক্টোবরে তেল উৎপাদন আরও বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হবে। বাজারের অংশীদারিত্ব ফিরে পেতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। এর আগে, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওপেক প্লাস প্রতিদিন প্রায় ২২ লক্ষ ব্যারেল তেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পাশাপাশি, সংযুক্ত আরব আমিরাতকে অতিরিক্ত ৩ লক্ষ ব্যারেল তেল উৎপাদনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
হাইটং সিকিউরিটিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উৎপাদন বাড়ানোর পরও গত কয়েক মাস ধরে মধ্যপ্রাচ্যের তেলের দাম বিশ্ববাজারে সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থান ধরে রেখেছে। এটি সৌদি আরবসহ অন্যান্য ওপেক সদস্যদের আরও উৎপাদন বাড়ানোর ব্যাপারে আস্থা জুগিয়েছে।
কমনওয়েলথ ব্যাংক অব অস্ট্রেলিয়ার বিশ্লেষক বিবেক ধর মনে করেন, এপ্রিল থেকে ওপেক প্লাসের উৎপাদন কোটা বাড়ানোর মূল কারণ হলো বাজারের একটি বড় অংশ দখল করা। তারা এখন ব্যারেলপ্রতি ৭০ ডলারের চেয়ে বরং ৬০ থেকে ৬৫ ডলার দামে ব্রেন্ট তেল বিক্রি করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে। তিনি আরও বলেন, যদি ব্রেন্ট তেলের দাম এই সীমাতে নেমে আসে, তবে মার্কিন তেল ডব্লিউটিআইর দামও ৫০ থেকে ৬০ ডলারের মধ্যে নেমে যেতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রের শেল তেল উৎপাদন অর্থনৈতিকভাবে টিকিয়ে রাখা কঠিন করে তুলবে।
বাজারের সক্রিয় ব্যক্তিরা এখন মার্কিন অপরিশোধিত তেলের মজুতের সরকারি তথ্যের দিকে নজর রাখছেন। আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২৯ আগস্ট শেষ হওয়া সপ্তাহে মার্কিন অপরিশোধিত তেলের মজুত ৬ লক্ষ ২২ হাজার ব্যারেল বেড়েছে, যা রয়টার্সের জরিপে অংশ নেওয়া বিশ্লেষকদের পূর্বানুমানের বিপরীত এবং এটি বাজারে চাপ বাড়াচ্ছে।