Dark Mode Light Mode

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Follow Us
Follow Us
English English

বিশেষ ঝুঁকিতে থাকলেও ছেলেরা কেন সহায়তা চায় না?

বিশেষ ঝুঁকিতে থাকলেও ছেলেরা কেন সহায়তা চায় না? বিশেষ ঝুঁকিতে থাকলেও ছেলেরা কেন সহায়তা চায় না?
বিশেষ ঝুঁকিতে থাকলেও ছেলেরা কেন সহায়তা চায় না?


সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিশ্বজুড়ে যুবসমাজে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার দিকগুলো নজরে আসতে শুরু হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার এই ঝুঁকিতে বিশেষভাবে সামনে আসছে কিশোর ও তরুণদের কথা। কয়েক দশকের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে পুরুষরা নারীদের তুলনায় মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সাহায্য কম চায়। 

২০২৩ সালের একটি মার্কিন গবেষণায় বলা হয়েছে, ছেলেরা সাধারণত মেয়েদের তুলনায় ৪০ শতাংশ কম সাহায্য চায়। 

Advertisement

২০২৪ সালের ইউরোপিয়ান চাইল্ড অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট সাইকিয়াট্রি জার্নালে প্রকাশিত এক পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, এটি উদ্বেগজনক, কারণ কিশোর ও যুবকদের মধ্যে আত্মহত্যার হার বেশি, অথচ তারা এ সংক্রান্ত সেবাগ্রহণে খুব কম আগ্রহী। 

কিন্তু কী কারণে এমনটা হচ্ছে? শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অভিভাবক ও নীতিনির্ধারকেরা কীভাবে এ বিষয়ে সাহায্য করতে এগিয়ে আসতে পারে?

নীরবে কষ্ট

১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী প্রতি সাত জনের একজন (ছেলে-মেয়ে উভয়) কোনো না কোনো মানসিক রোগে ভুগছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গত বছরের এক গবেষণায় জানানো হয়। সে গবেষণায় বলা হয়েছে, বিষণ্নতা, উদ্বেগ ও আচরণগত সমস্যা সবচেয়ে সাধারণ মানসিক রোগ এবং আত্মহত্যা হলো ১৫-২৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ।

ল্যানসেট সাইকিয়াট্রি কমিশনের মতে, প্রায় ৭৫ শতাংশ মানসিক সমস্যার সূচনা ২৫ বছর বয়সের আগেই হয় এবং এর সর্বোচ্চ মাত্রা মাত্র ১৫ বছর বয়সে শুরু হয়।

শারীরিকভাবে তরুণরা আগের চেয়ে সুস্থ হলেও মানসিকভাবে তারা বেশি বিপর্যস্ত এবং এই সংখ্যা বাড়ছে, যা যুব মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য “একটি বিপজ্জনক ধাপ” হয়ে উঠছে, বলছে সাইকিয়াট্রি কমিশন।

এরপরও এবং প্রয়োজন সত্ত্বেও অনেক ছেলে ও তরুণ পুরুষ মানসিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করে না।

গত ১৫ থেকে ২০ বছরে ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে মানসিক সমস্যার হার বিপজ্জনক হারে বেড়েছে, কিন্তু তরুণ ছেলেদের মধ্যে সাহায্য চাওয়ার প্রবণতা অনেক কম, বলেন অস্ট্রেলিয়ার ওরিজেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ও মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর প্যাট্রিক ম্যাকগোরি।

এই অনীহার কারণে প্রায়ই তরুণরা কেবলমাত্র একটা চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে সাহায্য চাইতে বাধ্য হয় যখন তারা সংকটে পড়ে। বিশেষজ্ঞরা বিবিসিকে জানান, সমাজে আবেগ চেপে রাখা ও আত্মনির্ভরশীলতার ধারণা ছেলেদের সাহায্য চাইতে নিরুৎসাহিত করে।

গবেষণায় ধারাবাহিকভাবে দেখা গেছে, ছেলেরা শিখে ফেলে যে ভেতরের দুর্বলতা দেখানো বা প্রকাশ হওয়া মানে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত হওয়া।

কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যার অধ্যাপক ও পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্য প্ল্যাটফর্ম হেডসআপগাইজ-এর পরিচালক ড. জন ওগ্রডনিজুক বলেন, অনেক ছেলেই এখনো সাহায্য চাওয়াকে ব্যর্থতার সমান বলে মনে করে।

যদি আমরা পুরুষতান্ত্রিক সামাজিকীকরণের কথা বলি, সেখানে বলা হয় পুরুষদের কী করা উচিত বা উচিত নয় সে সম্পর্কে অনেক ধরনের ধারণা প্রচলিত রয়েছে– যেমন শক্ত হও, কেঁদো না, নিয়ন্ত্রণে থাকো, দুর্বলতা দেখাবে না, নিজের সমস্যা নিজেই সমাধান করো, তিনি বলেন।

তিনি বলেন, দেখা যায় এইসব ধারণার অনেক কিছু নিজের আবেগকে বুঝতে ও প্রয়োজনে সাহায্য চাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। 

ড. ওগ্রডনিজুক বলেন, যখন পুরুষদের জন্য বিশেষভাবে সহায়তার ব্যবস্থা সাজানো হয়—যেমন ভাষা, ধরণ ও পদ্ধতিতে, সেভাবে সম্ভব হলে তখন তাদের সম্পৃক্ততা বাড়ে। 

অনানুষ্ঠানিক পদ্ধতি

সাম্প্রতিক গবেষণায় সামাজিক রীতিনীতি এবং দুর্বলতা দেখানো নিয়ে নেতিবাচক ধারণা ছাড়াও আরও কিছু বিষয় উঠে এসেছে, যা ছেলেদের মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে। 

অনেক ছেলেই নিজেদের লক্ষণ বা উপসর্গ চিনতে পারে না বা কীভাবে সাহায্য চাইতে হয় তা জানে না এবং তারা প্রথাগত হাসপাতাল জাতীয় পরিবেশে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না।

ছেলে বা যুবকরা সাধারণত অনানুষ্ঠানিক সহায়তা, যেমন বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলা বা নাম প্রকাশ না করে অনলাইনে সহায়তা নিতে বেশি আগ্রহী। সাহায্য চাওয়াকে শক্তি, দায়িত্ব ও কাজের অংশ হিসেবে যুক্ত করে উপস্থাপন করলে তার প্রভাব বেশি হয়। 

ফলে বিশ্বে তরুণদের সেবা দেওয়া অনেক প্রতিষ্ঠান প্রথাগত চিকিৎসার মডেল বাদ দিচ্ছে। 

যেমন অস্ট্রেলিয়ায় ওরিজেন সংস্থা তরুণদের সঙ্গে মিলে এমন জায়গা তৈরি করেছে, যেখানে ‘সফট এন্ট্রি’—অর্থাৎ অনানুষ্ঠানিক পরিবেশে কথোপকথন শুরু করা যায়।

প্রথমবারের মতো তরুণরা ডাক্তারের কক্ষে বসে পরামর্শ নিতে আগ্রহী নাও হতে পারে, বলেন ম্যাকগোরি। 

তিনি আরও বলেছেন, তারা হয়তো এমন কোনো আরামদায়ক পরিবেশ পছন্দ করবে, যেমন হাঁটতে হাঁটতে বা পুল বা টেবিল টেনিস খেলতে খেলতে কথা বলা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম: বন্ধু না শত্রু? 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভালো খারাপ দুই দিকই আছে। একদিকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া টিনএজার বা কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে সংযোগ তৈরি করে ও তথ্য দেয়, আবার অন্যদিকে ক্ষতিকর কনটেন্ট এবং পুরুষত্বের এক ধরনের বিষাক্ত ধারণা ছড়ায়।   

এখনকার তরুণদের বেশিরভাগই এখন পুরুষত্ব বিষয়ক ইনফ্লুয়েন্সার কনটেন্টের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে, বলেন মুভেম্বার ইনস্টিটিউট অব মেন’স হেলথ-এর বৈশ্বিক পরিচালক ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ড. সাইমন রাইস। 

বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ব্লগ বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যখন তথাকথিত পুরুষত্বের ধারণা তুলে ধরা হয় সেটিকে ‘ম্যানোস্ফিয়ার’ বলা হয়। মুভেম্বারের গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ‘ম্যানোস্ফিয়ার’ কনটেন্ট বেশি দেখে, তাদের মানসিক স্বাস্থ্য অন্যদের তুলনায় খারাপ। 

অবশ্য রাইস বলেন, সব কনটেন্ট নেতিবাচক নয় এবং সোশ্যাল মিডিয়াও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য একটি কার্যকর হাতিয়ার হতে পারে।

“আমরা নিশ্চিত করতে চাই সামজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইতিবাচক দিকগুলোকে কাজে লাগিয়ে যেন কমিউনিটি তৈরি করা যায়, ভালো মানসিক স্বাস্থ্য বা সুস্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য ছড়িয়ে দেয়া যায় এবং ক্ষতির ঝুঁকি কমানো যায়।”

তবে তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যালগরিদম বড় সমস্যা তৈরি করে, কারণ এগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যা ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি এমন কনটেন্টকে প্রাধান্য দেয়। ইতিবাচক ও স্বাস্থ্যকর কনটেন্ট সেগুলোকে ছাপিয়ে যেতে পারা বেশ কঠিন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডোলেসেন্ট সাইকিয়াট্রির অধ্যাপক মিনা ফাজেলও এতে একমত যে কিশোর-কিশোরী ও অভিভাবকদের অ্যালগরিদম কীভাবে কাজ করে তা শেখানো জরুরি।

তার আসন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, গত এক মাসে এক-তৃতীয়াংশ তরুণ সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ক্ষতি হতে পারে এমন কনটেন্ট দেখেছে।

তবে অধ্যাপক ফাজেল আরও যোগ করেন, দায় শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার নয়, সমাজের কাঠামোগত পরিবর্তনের বিষয়টিও বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন।

“পরিবার ও কমিউনিটির গঠন এখন নাটকীয়ভাবে বদলাচ্ছে এবং সোশ্যাল মিডিয়া অনেক তরুণের জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে,” তিনি বলেন। 

একাকীত্ব সংকট

ছেলেদের মধ্যে অন্যতম বড় একটা সমস্যা হলো একাকীত্ব। এটি অনেকটাই উপেক্ষিত অথচ একটা বড় চ্যালেঞ্জ। মে মাসে প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সী ২৫ শতাংশ পুরুষ তাদের পার হয়ে যাওয়া দিনের একটা বড় সময় একাকীত্ব বোধ করেছেন—যেটি জাতীয় গড় ১৮ শতাংশ এবং সমবয়সী নারীদের গড় ১৮ শতাংশের থেকেও বেশি।

ড. ওগ্রডনিজুক বলেন, তাদের সংগঠন হেডসআপগাইজ-এর তথ্য অনুযায়ী, একাকীত্ব ও জীবনের উদ্দেশ্যহীনতা এই দুটি তরুণ পুরুষদের সবচেয়ে বড় মানসিক চাপের কারণ।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ছেলেদের জন্য নিরাপদ জায়গা তৈরি করা জরুরি, যেখানে তারা বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে ও খোলামেলা কথা বলতে পারে—শুধু থেরাপি সেশনে নয়, বরং প্রতিদিনের মেলামেশার মধ্যেও।

এটি হতে পারে মেনটরশিপ বা পরামর্শ দেয়ার কর্মসূচি, বন্ধুবান্ধব সহায়তা গোষ্ঠী বা শ্রেণিকক্ষে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে নতুনভাবে ভাবার মাধ্যমে।

স্কুলের ভূমিকা

একটা ইতিবাচক দিক দেখা গেছে যে, যখন তরুণ ছেলেরা সাহায্য চায়, তারা সাধারণত তা থেকে উপকার পায়, বলেন অধ্যাপক মিনা ফাজেল।

তিনি আরও বলেন, সেই সাহায্য কোথায় দেওয়া হলো, তা গুরুত্বপূর্ণ নয়—তা হতে পারে স্কুলে, সমাজসেবায়, বা কমিউনিটিতে।   

এছাড়াও, স্কুল সংস্কৃতির প্রভাব ছেলেদের ভালো থাকা বা মানসিক স্বাস্থ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পড়াশোনার চাপ অথবা যেখানে ছেলেরা মেয়েদের তুলনায় পিছিয়ে, সেসব জায়গায় উদ্বেগ, হতাশা ও বিচ্ছিন্নতা বাড়িয়ে দিতে পারে।

অধ্যাপক ফাজেল মনে করেন, স্কুলকে ছেলেদের উপযোগী করে নতুনভাবে সাজানো দরকার।

“বিশ্বের বেশিরভাগ শিশুই স্কুলে যায়,” তিনি বলেন।

“তাই এখানেই হয়তো ভাবতে হবে শুধু একাডেমিক শিক্ষা নয়, বরং কিশোরদের বয়সে, বিশেষ করে ছেলেদের সামগ্রিক বিকাশ কীভাবে নিশ্চিত করা যায়।” 





Source link

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post
কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপমুক্ত থাকবেন যেভাবে

কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপমুক্ত থাকবেন যেভাবে

Next Post
‘যার কেউ নেই তার জন্য আল্লাহ আছেন’

‘যার কেউ নেই তার জন্য আল্লাহ আছেন’

Advertisement