
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) তাহমিদা আহমদ বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৯ কোটি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায়ই রয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ মানুষ।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলনকক্ষে এক সংলাপে তিনি এ তথ্য জানান। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের (বিবিএস) দেওয়া তথ্যকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ বলেও মন্তব্য করেন ইসি তাহমিদা। তিনি বলেন, জনসংখ্যা নিয়ে বিবিএসের ডেটা প্রশ্নবিদ্ধ। একবার তারা যেটা প্রকাশ করল, পরে আবার সেটা কমিয়ে দেখানোর জন্য বলা হয়েছে।
সংলাপে তাহমিদা আহমদ বলেন, ‘আমরা যে ভোটার তালিকা করলাম বাড়ি বাড়ি গিয়ে, সেখান থেকে তথ্যটা পেয়েছি। এটা একদম ঠিক তথ্য। আমাদের লোকসংখ্যা হলো ১৯ কোটি। এর মধ্যে ১ কোটি ৫১ লাখ বাইরে, প্রবাসী যেটাকে বলা হয়। শুধু ঢাকায় রয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ মানুষ।’
সকালে সংলাপের শুরুতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা অনেক কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করতে পেরেছি। সবচেয়ে বড় কাজ যেটা করতে পেরেছি, সেটা হচ্ছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা। এটা একটা বিশাল কাজ। আমরা প্রায় ২১ লাখ মৃত ভোটার কর্তন করতে পেরেছি।’
কমিশন নয়টি আইন সংশোধন করেছে উল্লেখ করে সিইসি আরও বলেন, ‘মোটামুটি নির্বাচন অনুষ্ঠানটা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য যা যা করা দরকার, এ ক্ষেত্রে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি।’
অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশন নির্বাচন কমিশনের অনেক কাজ এগিয়ে রেখেছে বলেও মন্তব্য করেন সিইসি।
তরুণ প্রজন্মের মতামতকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে প্রবীণ, দরিদ্র, নারী ও সংখ্যালঘুদের যাতে পেছনে ঠেলে দেওয়া না হয়, এ আহ্বান জানান সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী।
আগামী সংসদ নির্বাচনে ৫ থেকে ৭ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্বের প্রস্তাবে নারী সমাজ রাজি নয় উল্লেখ করে রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, তারা আমাদের পাঁচ থেকে সাত শতাংশ স্থান দেবে। দান –দক্ষিণা নাকি এটা? ৫৫ বছর পর এটা শুনতে অবাক লেগেছে।’
নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাশেদা কে চৌধূরী রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, ‘বারবার বলব, পাঁচ থেকে সাত পার্সেন্ট আমরা মানি না।’
ইসির আমন্ত্রণে সংলাপে অংশ নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাহমুদ হাসানউজ্জামান, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মাহফুজুর রহমান, পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, বিজিএমইর পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসাইনি, কবি মোহন রায়হান, টিআইবির পরিচালক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জারিফ রহমান প্রমুখ।