
সত্য কথা সব সময় সবার ভালো লাগে না। আবার কেউ সত্য কথা বলে নিজের ঘাড়ে বিপদ ডেকে আনতে চান না। কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি ফুটবলার সামিত সোম হচ্ছেন দ্বিতীয়জন। সত্য কথা বলে বিপদ ডেকে আনার পক্ষে না সামিত। নেপালের বিপক্ষে প্রায় নিশ্চিত জয় (২-১), হতে হতেও হয়নি। ম্যাচটা ২-২ গোলে ড্র করে চলে গেল নেপাল। দেশি ফুটবলারদের ভুল-ভ্রান্তিতে বার বার হোঁচট খাচ্ছে দেশের ফুটবল। আগামী মঙ্গলবার ঢাকায় এশিয়ান কাপের গ্রুপ পর্বে ভারতের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচ। ভারত ঢাকায় এসেছে।
গতকাল বাংলাদেশ দল পুনরায় অনুশীলনে নেমেছে। জাতীয় স্টেডিয়ামে নামার আগে কথা বলেন সামিত সোম। দেশি ফুটবলারদের ভুল-ত্রুটির কারণে বাংলাদেশ নিশ্চিত জয়ের ম্যাচও জিততে পারছে না-এমন প্রশ্নে সামিত এড়িয়ে যান। কাউকে দোষ দিতে চান না। দেশের ফুটবল দর্শক দেখেছেন হামজা জোড়া গোল করে ম্যাচটা জয়ের পথে তুলে দিয়ে মাংশ পেশিতে টান লাগার কারণে মাঠ ছেড়ে এসে বসতে না বসতে গোল হজম করে জয় হাতছাড়া হয়।
সামিতও বলছেন, ‘আমি একমত না। মানে আমরা সবাই ১১ জন ফুটবলার। দেশি-বিদেশি কোনো ব্যাপার না। আমরা যেভাবে পারি সবাইকে একসঙ্গে থাকতে হবে যে ম্যাচটা কীভাবে জিতবো। আর দিন শেষে অভিজ্ঞতাগুলো থেকে শিখতে হবে ভুলগুলো যেন না হয়। বাট আমরা কোনোদিন চিন্তা করি নাই যে বিদেশের খেলোয়াড় ভার্সেস দেশি খেলোয়াড়। ঐভাবে তো বাংলাদেশ জিততে পারবে না। আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে। এখানে দেশি-বিদেশি নয়, আমরা সবাই একটা দল। এখানে আলাদা করে কিছু দেখার সুযোগ নেই।’
সামিত বুদ্ধিমান ছেলে। সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলেন। এ ধরনের প্রশ্নে তিনি চটজলদি উত্তর দিয়েছেন। শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ দল গোল হজম করে। এর থেকে মুক্তির উপায় কি? ‘এটা বলা কঠিন। ভাগ্যটাও ভালো যাচ্ছে না। গত ম্যাচে নেপাল যে কর্নারটা আমার কাছে মনে হয় ওটা অফসাইড ছিল। আসলে ফুটবলে এরকমই হয়। জানি না কী কারণে এগুলো হচ্ছে, তবে আশা করি ভাগ্য আমাদের পক্ষে আসবে। এভাবে গোল খাব না। তবে মেইন জিনিস হলো আমাদের মনযোগ রাখতে হবে। ফোকাস থাকতে হবে ৯০ মিনিট পর্যন্ত, যতক্ষণ না পর্যন্ত শেষ বাঁশি বাজে। এজন্য আমাদের মনযোগ আরও বাড়াতে হবে।’
একটা সত্য কথা বলেছেন সামিত। নেপালের বিপক্ষে শেষ ১০ মিনিট যদি সময় নষ্ট করা হতো তাহলেও ম্যাচটা হাতছাড়া হতো না। সামিত বললেন, ‘ট্যাক্টিকস চেঞ্জ করতে হবে, প্রতিপক্ষের সঙ্গে মাইন্ড গেম খেলতে হবে। সময় নষ্ট করার খেলা যদি খেলা যায়। এসব আমরা এখনো শিখি নাই আরও আস্তে আস্তে ভাই, আরও শিখবো যে এক্সপেরিয়েন্স পাবো জিততেও পারবো।’
ভারত ম্যাচ নিয়ে সামিত বলেন, ‘কোচ বললো আমরা ২৩ বছর ধরে জিততে পারিনি। এশিয়া কোয়ালিফিকেশনে, ওয়ার্ল্ড কাপ কোয়ালিফিকেশন জিতি নাই এখনো। সো মোটিভেশনটা আলাদা করে বানাতে হবে না। সবাই জানে এই ম্যাচের অর্থ কী। ইভেন আমি যখন বাংলাদেশের জন্য খেলা শুরু করি, আমার মনে আছে প্রথম দিন আমাকে কেউ একজন বলেছিল ভারত ম্যাচের জন্য রেডি থাকতে। তখন আমাদের প্রতিপক্ষ ছিল সিঙ্গাপুর। তো এই ম্যাচের কথা আমাদের মাথায় অনেক আগে থেকেই ছিল। আমাদের মোটিভেশনটা আছে যে ভারত ম্যাচ জিততে হবে, আর জিতবো।’