
মার্জিন ঋণ বিধিমালায় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ার কিনতে চাইলে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীর নিজের বিনিয়োগ অন্তত ৫ লাখ টাকা করতে হবে। আবার শেয়ার বাজারে বিনিয়োগে অভিজ্ঞতা এক বছরের কম হওয়া চলবে না। কারো নিয়মিত আয় না থাকলে তিনিও এমন ঋণ নিতে পারবেন না। নিজস্ব বিনিয়োগ ৫ লাখ টাকার বেশি, তবে ১০ লাখ টাকার কম হলে ঐ বিনিয়োগের বিপরীতে সর্বোচ্চ অর্ধেক পরিমাণ অর্থ ঋণ নেওয়া যাবে। নিজস্ব বিনিয়োগ ১০ লাখ টাকার বেশি হলে ঐ সমপরিমাণ অর্থ ঋণ নেওয়া যাবে। তবে কোনো অবস্থাতেই ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব মূলধনের ১৫ শতাংশ বা ১০ কোটি টাকার বেশি হতে পারবে না। লোকসান হলেও বিনিয়োগকারীর কিছু না কিছু মূলধন ফেরত পাবেন। মার্জিন ঋণ বিধিমালা-২০২৫ এর খসড়ায় এমন বিধান রাখার প্রস্তাব করেছে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এ খসড়া সংস্থার ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহে প্রাপ্ত মতামতের ভিত্তিতে বিধানটি চূড়ান্ত করা হবে। বিএসইসির ইমেইল বা সংস্থাটির কার্যালয়ে ডাকযোগে মতামত পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
বিএসইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ২০১০ সালের ধসের পর মন্দ অভিজ্ঞতার কারণে মার্জিন ঋণ বিধিমালা নতুন করে সাজানো হচ্ছে। প্রস্তাবিত বিধিমালায় দরপতনে বিনিয়োগকারীর আর্থিক ক্ষতি হলে কিছু না কিছু মূলধন ফেরত পাওয়ার বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আগের ধসের পর এ ব্যবস্থা না থাকায় এবং আইন পরিপালন শিথিল করার কারণে লাখ লাখ
বিনিয়োগকারী একটি টাকাও ফেরত পাননি। উলটো ব্যাপক দরপতনে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের প্রান্তে। এ অবস্থার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতেই এ বিধান করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়া এ বিধিমালায় বলা হয়েছে, এই বিধান করার আগে যারা ৫ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে মার্জিন ঋণ নিয়েছেন, তাদের আগামী এক বছরের মধ্যে নিজস্ব বিনিয়োগ ৫ লাখ টাকায় উন্নীত করতে হবে। অন্যথায় ঐ মার্জিন অ্যাকাউন্টের সব শেয়ার বিক্রি করে অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দিতে হবে। এ খসড়ায় ‘ফোর্স সেল’ বা গ্রাহককে না জানিয়ে শেয়ার বিক্রিসংক্রান্ত ধারায় প্রস্তাব করা হয়েছে। মার্জিন অ্যাকাউন্টের পোর্টফোলিও মূল্য অর্থাৎ ঐ অ্যাকাউন্টে ধারণ করা সব শেয়ারের বাজারমূল্য প্রদত্ত মোট ঋণের ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত নামলে গ্রাহককে (বিনিয়োগকারী) নোটিশ প্রদান ছাড়াই ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলকভাবে ‘ফোর্স সেল’ করতে হবে।
এতে আরো বলা হয়েছে, মার্জিন অ্যাকাউন্টের পোর্টফোলিও মূল্য ঋণের ১৫০ শতাংশে নামার পরও কোনো প্রতিষ্ঠান অবহেলা করে শেয়ার বিক্রি করে ঋণ সমন্বয় না করলে এর পরের শেয়ারদর কমার কারণে বিনিয়োগকারীদের যতটা আর্থিক ক্ষতি হবে, তা ঐ প্রতিষ্ঠানকেই বহন করতে হবে। অবশ্য পোর্টফোলিও মূল্য প্রদত্ত ঋণের ১৭৫ শতাংশে নামার পর নোটিশ প্রদান করে মার্জিন সমন্বয় করতে সাত দিনের নোটিশসহ তিনটি নোটিশ দিতে বলা হয়েছে। আবার খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, কোনো বিনিয়োগকারী নিজে মার্জিন অ্যাকাউন্টে যতটা বিনিয়োগ করবেন, সর্বোচ্চ ঐ পরিমাণ নিতে পারবেন। অর্থাৎ মূলধন ও ঋণ অনুপাত হবে সর্বোচ্চ এক অনুপাত এক।