
বিনিয়োগ প্রক্রিয়ার ধাপগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিজেদের সাংগঠনিক কাঠামোয় ব্যাপক সংস্কার এনেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। এই পুনর্গঠনের মাধ্যমে দায়িত্ব ও কর্তব্যে অধিকতর স্পষ্টতা আসবে এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য সেবা আরও দ্রুত ও কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেবার মান মূল্যায়নে প্রবর্তন করা হয়েছে নির্ধারিত সূচক ‘কী পারফরম্যান্স ইনডিকেটরস (কেপিআই)’-এর।
বিডার এই কাঠামোগত সংস্কার সরকারের ঘোষিত ৩২ দফা বিনিয়োগ পরিবেশ সংস্কার কর্মপরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও প্রতিযোগিতামূলক ও আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার।
নতুন সাংগঠনিক কাঠামো সাজানো হয়েছে ইনভেস্টমেন্ট লাইফ সার্কেল-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। এটি বিডার কার্যক্রম পাঁচটি প্রধান অনুবিভাগ বা উইংয়ের আওতায় পরিচালিত হবে-ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন (বিনিয়োগ আকর্ষণ ও প্রবেশ পর্যায়), রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি (নীতি সহায়তা ও অ্যাডভোকেসি), অপারেশনস (বিনিয়োগ শুরু, সম্প্রসারণ ও ধারাবাহিকতা রক্ষা), ডিজিটাল ডেভেলপমেন্ট (বিনিয়োগ সেবার আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল সংস্কার) এবং অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক সহায়তা)।
রোববার (২ নভেম্বর) বিডার মাল্টিপারপাস হলে পুনর্বিন্যাসকৃত সাংগঠনিক কাঠামো বিষয়ে অবহিতকরণ বিষয়ক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, বিডা অন্যান্য সাধারণ সরকারি দপ্তরের মত নয়। এটি বিশেষায়িত সংস্থা, যার মূল দায়িত্ব বিনিয়োগকারীদের চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত সাড়া দেওয়া। বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ পরিবেশ দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে, তাই বিডাকেও সেই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই কাঠামোগত সংস্কার আমাদের দেশি ও বিদেশি অংশীজনদের দীর্ঘদিনের পরামর্শের ফলাফল, যা এখন বাস্তবে রূপ দিচ্ছি।
বিডার নতুন কাঠামোগত সংস্কারের অধীনে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল—নির্বাহী সদস্য পদে এখন থেকে বিডার নিজস্ব কর্মকর্তা ছাড়াও বেসরকারি খাতের পেশাজীবীরা অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন, যা পূর্বে শুধুমাত্র প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষিত ছিল; রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি এবং ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন শাখাকে পৃথক ইউনিট হিসেবে গঠন করা হয়েছে; প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় বিশেষ ডেস্ক চালু করা হচ্ছে এবং বিনিয়োগ সহায়তায় খাতভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ও রিলেশনশিপ ম্যানেজার নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের জাতীয় কমিটি দেশের সকল বিনিয়োগ সংস্থার সমন্বয়ে একীভূত কাঠামো প্রণয়নের রোডম্যাপ তৈরি করছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা খণ্ডিত সেবার পরিবর্তে একক প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রয়োজনীয় সব সেবা নিতে পারবেন।
বিডা ইতোমধ্যে নতুন কাঠামোর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করেছে এবং শিগগিরই এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।