
টোকিওতে ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিকসে খেলতে এসে প্রথম দিনটায় অনুশীলন করতে পারেননি বাংলাদেশের অ্যাথলেট নাজমুল হোসেন রনি। কিছু বুঝে উঠতে পারেননি প্রথম প্রথম। টোকিওর প্রিন্স হোটেলটি ৩৯তলা ভবন। ১৫ তলায় থাকেন রনি। প্রথম দিন অনুশীলন করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন বেচারা রনি। অনুশীলনে যাওয়ার জন্য বাসের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু তিনি হোটেল লবিতে নেমে জানতে পারেন ওখানে বাস নেই।
হোটেলের সাত তলার ওপরে বাস আসে। ওখান থেকে উঠতে হবে। ৪০০ মিটার হার্ডলসে খেলতে আসা রনি গিয়ে দেখেন শার্টল বাস নেই। বাধ্য হয়ে গাড়ি পার্কিংয়ে গিয়ে অনুশীলন করেছেন। প্রথম দিনটা এভাবে কাটলেও পরের সময়গুলো কাজে লাগাচ্ছেন রনি। তবে রনি পার্কিংয়ে একাই নয়, অনেক তারকাকেও দেখা গেছে গাড়ি পার্কিংয়ে ওয়ার্মআপ করতে। দিন দুপুরে ইউরোপিয়ান একাধিক স্প্রিন্টার গাড়ির পিক অ্যান্ড ড্রপ পয়েন্টে ওয়ার্মআপ করছেন। সেগুলো দাঁড়িয়ে দেখছিলেন বাংলাদেশের সাদাসিদে অ্যাথলেট রনি। আর চোখেমুখে রাজ্যের হতাশা।
অনুশীলন করতে গিয়ে দেখেছেন আধুনিক সুযোগ সুবিধা। অ্যাথলেটিকসের দুনিয়াটা কোথায় রয়েছে আর বাংলাদেশের অ্যাথলেটিকস কোথায় পড়ে আছে। কী নেই, বাংলাদেশের অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকের সঙ্গে জাপানের ট্র্যাকের কোনো মিল-ই খুঁজে পেলেন না। ওখানকার ট্র্যাকে হাঁটলেও অন্যরকম লাগে। হোটেল লবিতে দাঁড়িয়ে রনি বলছিলেন, ‘জাপানের ট্র্যাকে অনুশীলন করলে একটা আলাদা অনুভূতি হয়। ঢাকার ট্র্যাক আর এখানকার (জাপান) ট্র্যাকে পার্থক্য বুঝা যায়।’
অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কেমন? রনি বললেন, ‘সবই ভালো। তুলনা করার মতো না। আধুনিক ইকুইপেমন্টস। আমরা অনেক পিছিয়ে আছি এই সব বিষয়ে। এই সব আধুনিক ইকুইপমেন্টস আমাদের নেই। এজন্য খারাপ লাগে। আমাদেরও উন্নতি হচ্ছে তবে আমরা অনেক পিছিয়ে।’
রনির সামনে দিয়ে বিভিন্ন দেশের নারী-পুরুষ অ্যাথলেটারা যাওয়া আসা করছেন। একেক জনের উচ্চতা দেখলে চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। তাদের শারীরিক গঠন খুবই মজবুত। রনির কাছে মনে হয় ইউরোপীয়ান, জামাইকান, সুইডেন, নরওয়ে, যে কোনো দেশের অ্যাথলেটদের থাই যেন রনিদের কোমরের সমান। রনি বললেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ওদের শারীরিক গঠনই আলাদা। অনেক শক্তিশালী। দেখলে মনে হয় আমরা কোথাও নেই।’
নাজমুল হোসেন রনি টোকিওতে ওয়ার্ল্ড অ্যাথলেটিকসে এসে খাওয়ার কষ্ট করছেন। কথাটা এখন আর সরাসরি বলতে চান না। কারণ বলে কোনো লাভ নেই। মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বললেন, ‘আমরা এসব খাবার-দাবারে অভ্যস্ত না।’ আগামীকাল সন্ধ্যায় রনির ৪০০ মিটার হার্ডলসের বাছাই।