
বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে বায়ুদূষণে শিশু মৃত্যুর ঘটনা নীরব মহামারি হয়ে দেখা দিয়েছে। উন্নত দেশের শিশুদের তুলনায় স্বল্পোন্নত দেশের শিশুদের বায়ুদূষণে মৃত্যুর ঝুঁকি ৯৪ গুণ বেশি। আর বিশ্বের সর্বাধিক দূষিত দেশের তালিকার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ; ২০২১ সালেই পরিসংখ্যান বলছে—শুধু ১৯ হাজারের বেশি পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশু বায়ুদূষণ-সম্পর্কিত কারণে মারা গেছে; যা গড়ে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় দুই জন। এই বৈষম্যের মূলে রয়েছে দীর্ঘদিনের জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভরতা, দূষণনির্ভর অবকাঠামো নির্মাণ, জীবাশ্ম জ্বালানির অধিক ব্যবহার, প্রাতিষ্ঠানিক স্থবিরতাকে দায়ী করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বেলজিয়ামভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জিরো কার্বন অ্যানালাইটিকস (জেডসিএ)-এর নতুন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘স্ট্রাকচারাল ডিপেনডেন্সিস পারপেচুয়েট ডিসপ্রোপোর্শনেট চাইল্ডহুড হেলথ বার্ডেন ফ্রম এয়ার পলিউশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য প্রকাশ করা হয়। ১৫ অক্টোবর বুধবার বাংলাদেশ সময় রাতে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে—পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের জন্য বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ এখন বায়ুদূষণ। বিশ্বে এ বয়সে যত শিশুর মৃত্যু হয় তার এক-চতুর্থাংশেরও বেশির জন্য দায়ী বায়ুদূষণ। এই সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। বায়ুদূষণ কেবল মৃত্যুর কারণই নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি রোগের মাধ্যমে সারা জীবনের ক্ষতিও ডেকে আনছে।
জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিত্সক ডা. সাজিদ হোসেন খান বলেন, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য বায়ুদূষণ আজ অন্যতম বড় হুমকি। আমরা জানি, বায়ুদূষণের সংস্পর্শ শ্বাসতন্ত্রের রোগসহ আরো নানা জটিলতার সঙ্গে জড়িত। বিশুদ্ধ বাতাস যেমন প্রয়োজন, তেমনি বিশুদ্ধ পানিও অপরিহার্য। আমাদের শিশুদের টিকে থাকা, সুস্থভাবে বেড়ে ওঠা এবং বিকশিত হওয়ার জন্য বায়ুদূষণ কমাতে এখনই দৃঢ পদক্ষেপ নিতে হবে।