
শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই ভারত উপমহাদেশের তিন প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোতে বায়ুদূষণ বেড়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) পাকিস্তানের লাহোরের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ, শহরটির বায়ুমান সূচক (একিউআই) ৩৫৯ রেকর্ড করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী ঢাকার বায়ুমান ১০৫, যা গতকাল ছিল ৮০। বায়ুদূষণের শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় আজ ১০ম স্থানে আছে ঢাকা, গতকাল ছিল ২২তম স্থানে। শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো—ভারতের কলকাতা (২৪৮) ও দিল্লি (২৩১), উগান্ডার কাম্পালা (১৫৯) ও পাকিস্তানের করাচি (১৫৬)।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়, ১০১-১৫০-এর মধ্যে হলে তা সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাসকে দুর্যোগপূর্ণ বলা হয়।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত ২০২৩ সালের নভেম্বরের একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।
পাশাপাশি দূষণ রোধে ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতেও বলা হয়েছে।