
এশিয়ান কাপ ফুটবলে হংকংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ফিরতি ম্যাচ আগামীকাল। ম্যাচ নিয়ে হংকং সিরিয়াস। প্রশ্ন উঠছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন কতটা সিরিয়াস। হংকংয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ নানা সমস্যায় পড়ছে আর নানা প্রশ্ন উঠে আসছে। হংকংয়ে গিয়ে প্রথম ধাক্কা খায় অনুশীলন মাঠ নিয়ে। প্রথম দিন বাজে মাঠ দিয়েছে। সেই মাঠে অনুশীলন করাও সম্ভব না। ঘাস অনেক বেশি। মাঠ উঁচুনিচু। এমন মাঠে অনুশীলন করা কঠিন। আর অনুশীলন ও করবে না বাংলাদেশ। সেই মাঠ বাদ দিয়ে নতুন করে মাঠ খুঁজতেই নাকি দিন পেরিয়ে গেছে।
বাংলাদেশ দলের সঙ্গে একজন লিয়াজো অফিসারকে সঙ্গে নিয়ে মাঠ খুঁজেছেন ম্যানেজার আমের খান। কয়েকটা মাঠ খুঁজে একটা মাঠ কোনো রকম পছন্দ হলেও ও কিছু করার নেই। অনুশীলন করতে হবে। মোহামেডান যেভাবে পল্টন ময়দানের মাঠে অনুশীলন করে, তার চেয়ে একটু ভালো মাঠ পাওয়া গেছে। হংকংয়ে অবস্থানরত বাংলাদেশ দল মনে করছে, হোম এডভান্টেজ নিচ্ছে হংকং।

ঢাকায় এসে হংকং ফুটবল দলের অভিযোগ ছিল, তাদের বিরক্ত করতেই বাংলাদেশ দল ট্রাফিক জ্যাম তৈরি করেছিল। কথাটা তাদেরকে বিশ্বাস করানো কঠিন ছিল যে, ঢাকার ট্রাফিক জ্যামটা বেশি। বাংলাদেশ ফুটবল দল হংকংয়ে পৌঁছানোর পর নানা সমস্যায় পড়ছে। কোথায় থাকবে, অনুশীলন মাঠ কোথায়।
এসব আগে থেকে নির্ধারণ করেনি বাফুফে। খেলতে যাওয়ার আগে হংকংয়ে গিয়ে দেখে আসেনি কোথায় অনুশীলন করবে, সেই মাঠ কেমন, অনুশীলনের মতো মাঠ কিনা। আপত্তি থাকলে কিংবা মাঠ পছন্দ না হলে নতুন মাঠ ঠিক করা যায়। কিন্তু বাফুফে সেটি করেনি।
গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগেও নানা সমস্যায় পড়েছিল। সেবারও কথা উঠেছিল খেলোয়াড়রা যাওয়ার আগে গিয়ে অনুশীলন মাঠ, ম্যাচ ভেন্যু, হোটেল, পরিবহন, সড়কে ট্রাফিক জ্যামসহ নানা সমস্যা দেখে নিলে টিম যাওয়ার পর অসুবিধা কম হয়। সেবার ভারতে গিয়ে অনেক সমস্যা হয়েছিল। সেটা দেখেও বাফুফে সজাগ হয়নি, নজর দেয়নি। তার প্রমাণ এবার হংকংয়ে গিয়ে সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

হংকয়ে যাওয়ার পথে ভোগান্তি শুরু হয় মধ্যপথে। প্রথম কথা হচ্ছে, ৯ অক্টোবর রাতে হংকংয়ের বিপক্ষে ৪-৩ গোলের হারের ম্যাচটায় খেলোয়াড়রা ছিলেন ক্লান্ত। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম হয়নি। পরদিনই হংকংয়ের বিমান ধরার জন্য ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠতে হয়েছে। ক্লান্ত শরীর নিয়ে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে দুই ঘণ্টার ট্রানজিটে পড়তে হয়। ফুটবলাররা হংকংয়ে পৌঁছাতে পৌঁছাতেই আরও ক্লান্ত হয়ে পড়েন।
কিন্তু বাফুফে কেন এমন রুটে টিকিট কিনলো, যে কোনো ফুটবল ফেডারেশনের চিন্তাভাবনা হচ্ছে-খেলোয়াড়রা বিদেশে ম্যাচ খেলতে গেলে ভোগান্তি এড়াতে যতটা কম ট্রানজিট দেওয়া যায়। সেটি আমলে নিলো না বাফুফে। ক্লান্ত ফুটবলারদেরকে ব্যাংককে বিমানবন্দরে বসিয়ে রাখল। অথচ ঢাকায় সরাসরি হংকংয়ে যাওয়ার বিমানব্যবস্থা রয়েছে ঢাকা থেকে।

হংকং ঢাকায় খেলতে এসে ফেরার টিকিট চেঞ্জ করেছিল। ৯ অক্টোবর রাতে ম্যাচ খেলে হংকং ফুটবল দল সেই রাতেই ফ্লাইটে উঠে দেশে ফিরে গেছে। তারা যে রিটার্ন ফ্লাইট চেঞ্জ করেছে, সেটি আগেই জানিয়েছিল। অথচ বাংলাদেশ কয়েক মাস আগে থেকে জানে, ৯ তারিখে ম্যাচ খেলে চার দিন পরই, ১৪ অক্টোবর ফিরতি ম্যাচ খেলবে। তাহলে কেন আগে থেকে বিমানের টিকিট কনফার্ম করেনি। বাফুফের এমন অদূরদর্শিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।