
৫ বছর ধরে মোজাফফরভ মোহামেডানে খেলছেন। আর্থিক সমস্যা, মাঠ সমস্যা আজও সমাধান হয়নি। সাদাকালো জার্সিতে প্রথম দিন থেকেই সমস্যা দেখেছেন। মোজাফফরভের বাবা ফুটবল কোচ। এখন অসুস্থ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মোজাফফরভের ভাই একটি ক্লাবের ফুটবল কোচ। বাংলােেশর ফুটবল কাঠামো দেখে তার কাছে মনে হচ্ছে এভাবে ফুটবল চলে না।
নিজ দেশের উদাহরণ টানলেন। উজবেকিস্তান আগামী বিশ্বকাপে খেলবে। কীভাবে সম্ভব হলো, জানতে চাইলে অনেক কথা তুলে ধরলেন মোজাফফরড। অন্তত ২০ জন ফুটবলার দেশের বাইরে ইউরোপিয়ান লিগে খেলেন। তার দেশের ছোট একটা এলাকায় ১০টা একাডেমি রয়েছে। ওখানে ৫ বছর বয়সে খেলা শেখার পাঠ শুরু হয়। সারা দেশ থেকে ৩০ জন বাছাই করা হয়। যেদিন থেকে একাডেমিতে ঢুকবে সেদিন থেকে তার জন্য বেতন চালু হবে। বাবা-মায়ের হাতে বেতন তুলে দেওয়া হয়। পরিণত বয়সে তাকে ক্লাব ফুটবলে বিক্রি করবে একাডেমি। অর্থ আয় করবে একাডেমি।
মোজাফফরতের কথা শুনে আলফাজ বললেন, ‘আমাদের দেশে ৫০০ একাডেমি রয়েছে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে সেগুলো কাজের না। অনুশীলন করলেই তো আর হয় না। খেলোয়াড়দের প্রচুর সুযোগ-সুবিধা দিতে হয়। প্র্যাকটিস করল কিন্তু খাওয়া-দাওয়া নেই, তাহলে লাভ কি? আমাদের সময়ও কিছু ছিল না। আমরা ক্লাবের বাইরে নিজেরা অনুশীলন করতাম। নিজের টাকায় খেতাম। পরে একটা পর্যায়ে যেতে পেরেছি। কিন্তু সেটা তো যথেষ্ট ছিল না। দিন বদলেছে।’ মোজাফফরত বললেন, ‘আপনি বলেন বাংলাদেশে একটা ফুটবল মাঠ আছে কি না। মোহামেডানের মতো বড় দলের মাঠ নেই। সত্যিকার অর্থে ফুটবল মাঠ যেটা বুঝায় সেটি এখানে আছে কি না।’ মাঠ নিয়ে আলফাজ বলেছিলেন, ‘জাতীয় স্টেডিয়ামে এমন একটি মাঠ রয়েছে যেখানে খেললে ইনজুরি হয়। খেলোয়াড়দের নানা সমস্যা হয়।’
মোজাফফরভ বললেন, ‘হামজা ভালো ফুটবলার। একজন হামজা দিয়ে কি হবে। এ রকম ২০-৩০ জন হামজা দরকার। বাংলাদেশ যদি ফুটবল একাডেমি তৈরি করতে পারে। মডেল একাডেমি করতে পারে। তাহলে একাডেমি থেকে প্রচুর সংখ্যক হামজা বের হবে। বাংলাদেশেই হামজা তৈরি করা সম্ভব। বিশ্বকাপে খেলা কঠিন কিছু হবে না। পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে, টাকা লাগাতে হবে, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।’ আসলেই আমাদের দেশের ফুটবলে প্রচুর প্রতিভা রয়েছে। ছোট ছোট ফুটবলারের খেলা দেখেন, তাদের প্রতিভা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যাবে। অথচ এই প্রতিভাগুলো পরিচর্যা পায় না। তাদেরকে তুলে আনতে কোনো উদোগ নেওয়া হয় না। প্রতিভা তুলে আনলে ঝাঁকে ঝাঁকে খেলোয়াড় পাবেন। বড় করেন, সেটা তো পারবেন না। একটা একাডেমি হলে নানা ধরনের তত্ত্ববির হবে, আত্মীয়করণ হবে। অমুকে ফোন করবে তমুককে নিতে হবে। কোচকে চাপ দিয়ে যদি জাতীয় দলে খেলোয়াড় ঢোকান তাহলে দেশের ফুটবল উন্নতির আশা করবেন কীভাবে-বলছিলেন মোহামেডান কোচ, সাফ গেমস ফুটবল চ্যাম্পিয়ন এবং সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ জাতীয় দলের স্ট্রাইকার আলফাজ আহমেদ।