
বজ্রপাত থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষার জন্য পূর্ববর্তী সরকারের নেওয়া বজ্রনিরোধক দণ্ড বা লাইটিং অ্যারেস্টার প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর পরিবর্তে এখন জনগণকে সচেতন করা এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আগাম সতর্কবার্তা পৌঁছে দেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।
তিনি বলেন, বজ্রনিরোধক দণ্ড দেশের প্রেক্ষাপটে কার্যকর নয়। এগুলো মাত্র ১০০ মিটার ব্যাসার্ধে কাজ করে, যা সারা দেশের সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত নয়। এত বিপুল সংখ্যক দণ্ড স্থাপন করা ব্যয়বহুল ও অকার্যকর। তাই সরকার মনে করে, মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আগাম সতর্কতা প্রদানই বেশি ফলপ্রসূ হবে।
ফারুক ই আজম জানান, নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে বজ্রপাত হওয়ার দুই ঘণ্টা আগেই সতর্কবার্তা দেওয়া সম্ভব। এখন লক্ষ্য হচ্ছে, কীভাবে স্বল্পতম সময়ে সর্বাধিক মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছানো যায়। বিশেষত কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বার্তা পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে এবং দ্রুত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২০১৫ সালে বাংলাদেশে বজ্রপাতকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘দুর্যোগ’ ঘোষণা করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের সমীক্ষায় দেশের ১৫টি জেলাকে বজ্রপাত-প্রবণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়—নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পাবনা, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও দিনাজপুর।
পূর্ববর্তী সরকার ২০২১-২২ অর্থবছরে এসব জেলার ১৩৫টি উপজেলায় ৩৩৫টি বজ্রনিরোধক দণ্ড স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দ ছিল ১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তবে অন্তর্বর্তী সরকার বাস্তবতার নিরিখে এ কর্মসূচি কার্যকর নয় বলে মনে করে তা বাতিল করেছে এবং বিকল্প কৌশল গ্রহণ করেছে।