
ভারতের মণিপুর রাজ্যে ফের অশান্তি। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মণিপুরের বিষ্ণুপুর জেলায় সশস্ত্র দুষ্কৃতিকারীদের অতর্কিত হামলায় ৩৩ আসাম রাইফেলসের দুই সদস্য নিহত এবং চারজন আহত হয়েছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানটি ইম্ফল বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সশস্ত্র দুষ্কৃতিকারীরা অতর্কিতে গুলি চালায়, যার ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, একজন সেনাসদস্য ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং আহত অন্যদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আরও একজন সেনার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়।
গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে অতিরিক্ত মহাপরিচালক আশুতোষ কুমার সিনহা বলেন, ‘সব নিরাপত্তা বাহিনীর শান্তি ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর এই হামলা হয়েছে।’
এই মুহূর্তে পাঁচজন আসাম রাইফেলস সদস্য ইম্ফলের রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসে চিকিৎসাধীন।
এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যারকে জানিয়েছেন, এই হামলার পেছনে উপত্যকা-ভিত্তিক বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো জড়িত।
তিনি আরও বলেন, ‘সম্ভবত পিএলএ (পিপলস লিবারেশন আর্মি) এই হামলা চালিয়েছে।’ তবে, দ্য ওয়্যার এই দাবির সত্যতা স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি। কর্মকর্তা আরও জানান, ‘তদন্ত চলছে।’
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য ওয়্যার জানায়, সশস্ত্র ব্যক্তিরা মোটরসাইকেলে এসে ওত পেতে ছিল। হামলাটি এতটাই আকস্মিক ছিল যে জওয়ানরা প্রতিরোধের সুযোগ পাননি। কয়েক রাউন্ড গুলি চালানোর পর হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ এবং রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মণিপুর রাজ্য পরিদর্শনের ছয় দিন পর এই হামলার ঘটনা ঘটল।
২০২৩ সালের ৩ মে থেকে মণিপুরে জাতিগত সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত বেসামরিক নাগরিক, সেনা জওয়ান এবং রাজ্য পুলিশের কমান্ডারসহ ২৬০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন এবং ৬০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। এই দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের ফলে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ, গ্রাম ধ্বংস এবং পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্র লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।