
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তার প্রস্তাবিত ২০ দফা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনাটি ‘সম্পূর্ণভাবে চূড়ান্ত ও সম্পন্ন’ হয়েছে এবং এই চুক্তির অধীনে গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোর করে বিতাড়িত করা হবে না, বরং ‘উল্টোটা ঘটবে’।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) হোয়াইট হাউসে ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, ‘কাউকে জোর করে বের করে দেওয়া হবে না, বরং একদম উল্টোটা। না, আমরা এমন কিছু করার কথা ভাবছিও না। এটি একটি দারুণ পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনাকে সবাই সমর্থন করেছে।’ তিনি আরও নিশ্চিত করেন, গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত এবং তিনি সপ্তাহান্তেই মধ্যপ্রাচ্য সফরে যাচ্ছেন।
ট্রাম্পের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দীদের সোমবার বা মঙ্গলবার মুক্তি দেওয়া হবে এবং তিনি মিসরে আয়োজিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার আশা করছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি এটি দারুণ কিছু হতে যাচ্ছে। আমি মনে করি বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হবে সোম বা মঙ্গলবার। আমি সম্ভবত সেখানে থাকব। থাকার আশা করছি। আমরা রোববার রওনা হওয়ার পরিকল্পনা করেছি এবং আমি সেই সফরের অপেক্ষায় আছি।’
গত ২৯ সেপ্টেম্বর ট্রাম্প গাজার জন্য এই ২০ দফা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। পরিকল্পনার প্রধান দিকগুলো হলো, সব ইসরায়েলি বন্দীর মুক্তির বিনিময়ে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং ধাপে ধাপে ইসরায়েলি সেনাদের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে প্রত্যাহার।
পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে হামাসবিহীন নতুন গাজা প্রশাসন গঠন, একটি ফিলিস্তিনি-আরব নিরাপত্তা বাহিনী গঠন এবং হামাসের নিরস্ত্রীকরণ অন্তর্ভুক্ত আছে। তবে হামাসের এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিরা নিরস্ত্রীকরণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের আত্মরক্ষার অস্ত্র দরকার এবং প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে।’
জবাবে ট্রাম্প জানান, হামাসের অস্ত্র সমর্পণের বিষয়টি শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে সমাধান করা হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘নিরস্ত্রীকরণ হবে,’ পাশাপাশি ইসরায়েলি বাহিনীরও ‘পিছু হটা’র বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
ইসরায়েল সরকার জানিয়েছে, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। ওই বৈঠকের পর ইসরায়েলের পূর্ণ মন্ত্রিসভার বৈঠকে চুক্তিটি অনুমোদন দেওয়া হয়, যার অধীনে ইসরায়েলি সেনাদের গাজা থেকে সরে যাওয়ার কথা রয়েছে। সরকারের মুখপাত্র শোশ বেদরোসিয়ান সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রথম ধাপের চূড়ান্ত খসড়ায় আজ সকালে মিসরে সব পক্ষ সই করেছে, যাতে সব বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়।’
তিনি আরও জানান, ‘আমাদের সব বন্দী—জীবিত ও মৃত—৭২ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি পাবে। অর্থাৎ সোমবারের মধ্যেই।’ ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সা’র এই বলে মন্তব্য করেন যে, বন্দীদের মুক্তিই ‘এই যুদ্ধের অবসান ঘটাবে।’
সূত্র: টি আরটি ওয়ার্ল্ড