
গাজায় ইসরায়েলের চলমান গণহত্যা ও মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষের তীব্র সমালোচনা করেছে মিশর। আরব দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আবদেলাত্তি বলেন, ‘স্থানচ্যুতি কোনো বিকল্প নয় এবং এটি মিশরের জন্য একটি লাল রেখা এবং আমরা এটি ঘটতে দেব না।’
সাইপ্রাস সফরে থাকা আবদেলাত্তি শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের বলেন, ‘স্থানচ্যুতি মানে ফিলিস্তিনিদের অস্তিত্বের অবসান। তাদের জন্মভূমি থেকে মানুষকে উচ্ছেদের কোনো আইনি, নৈতিক বা নীতিগত ভিত্তি নেই।’
গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধে মধ্যস্থতার চেষ্টা করার জন্য মিশর কাতার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’র বিষয়টি জোর দিয়ে বলে আসছে।
আবদেলাত্তি আরও বলেন, ‘স্থলভাগে যা ঘটছে তা কল্পনারও বাইরে। সেখানে গণহত্যা চলছে, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গণহত্যা চলছে, ইসরায়েলিদের তৈরি কৃত্রিম অনাহার চলছে।’
এদিকে, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ৬৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একই সময়ে দেড় লাখের বেশি বেশি মানুষ আহত হয়েছে। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
চলতি বছরের শুরুতে যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর ২৭ মে থেকে ইসরায়েল জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোকে এড়িয়ে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন-এর মাধ্যমে একটি পৃথক সাহায্য বিতরণ উদ্যোগ শুরু করেছে। এতে সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এই পদক্ষেপের পর থেকে অঞ্চলটিতে দুর্ভিক্ষের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। প্রতিনিয়ত না খেয়ে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, যাদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও গুলি চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে শত শত মানুষ নিহত হচ্ছে।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য নেতানিয়াহু ও তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। উপত্যকাজুড়ে যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।