Dark Mode Light Mode

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Follow Us
Follow Us
English English

‘পিরিয়ড ট্যাক্স’ নিয়ে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে আইনি লড়াই মাহনুরের

‘পিরিয়ড ট্যাক্স’ নিয়ে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে আইনি লড়াই মাহনুরের ‘পিরিয়ড ট্যাক্স’ নিয়ে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে আইনি লড়াই মাহনুরের
‘পিরিয়ড ট্যাক্স’ নিয়ে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে আইনি লড়াই মাহনুরের


পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে বেড়ে উঠা মাহনুর ওমর নিজের কৈশোরের লজ্জা ও অসহায় অভিজ্ঞতাকে রূপ দিয়েছেন এক ঐতিহাসিক আইনি লড়াইয়ে। 

২৫ বছরের মাহনুর সম্প্রতি লাহোর হাই কোর্টে একটি আবেদন করেছেন। যেখানে বলা হয়েছে, স্যানিটারি প্যাডের ওপর সরকারি করকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করতে হবে। তার দাবি, এই কর আসলে নারীর ওপর আরোপিত বৈষম্যমূলক ‘পিরিয়ড ট্যাক্স’।

Advertisement

আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাহনূর ওমারের এখনও মনে পড়ে, মাসিকের সময় স্কুলে গিয়ে কতটা লজ্জা ও উদ্বেগে পড়তে হতো তাকে। স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে টয়লেটে যাওয়া ছিল এমন একটি গোপন কাজ, যেন কোনো অপরাধ ঢাকার চেষ্টা করছেন।



মাহনূর ওমার বলেন, ‘আমি জামার হাতার নিচে স্যানিটারি ন্যাপকিন লুকিয়ে রাখতাম। মনে হতো যেন টয়লেটে কোনো মাদকদ্রব্য নিয়ে যাচ্ছি। মাহনূর মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। তার বাবা একজন ব্যবসায়ী আর মা গৃহিণী।’

মাহনূর আরও বলেন, ‘কেউ এ বিষয়ে কথা বললে শিক্ষকেরা তাকে চুপ করিয়ে দিত।’ একবার এক সহপাঠী তাকে বলেছিল, তার মা স্যানিটারি ন্যাপকিন কেনা ‘অর্থের অপচয়’ বলে মনে করেন।

এ কথা শোনার পর বিষয়টি মাহনূরকে নাড়া দেয়। তিনি বলেন, ‘যদি মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো এভাবে চিন্তা করে, ভাবুন তো অন্যদের কাছে এই পণ্যগুলো কতটা দুষ্প্রাপ্য।’

ইউনিসেফ পাকিস্তান বলছে, অন্যান্য স্থানীয় কর যোগ করলে কার্যত স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর মোট কর দাঁড়ায় প্রায় ৪০ শতাংশ।

মাহনূর ওমারের ওই পিটিশনে বলা হয়েছে, নারীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলা এসব কর বৈষম্যমূলক। এর মধ্য দিয়ে সংবিধানের এমন কিছু ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে, যেগুলো সাম্য, মর্যাদা, শোষণের অবসান ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।

পাকিস্তানে অধিকাংশ পরিবারেই মাসিক নিয়ে কথা বলা এখনো নিষিদ্ধ। এমন অবস্থায় সেখানে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর করের কারণে নারীদের জন্য এটির প্রাপ্যতা আরও কঠিন দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন ওমারসহ অন্য আইনজীবী ও পিটিশন–সমর্থক অধিকারকর্মীরা।

পাকিস্তানে বর্তমানে যেকোনো ব্র্যান্ডের এক প্যাকেট স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে প্রায় ৪৫০ রুপি (১ ডলার ৬০ সেন্ট) খরচ হয়। যে দেশে মাসিক মাথাপিছু আয় মাত্র ১২০ ডলার, সেখানে এক প্যাকেট ন্যাপকিনের দাম নিম্ন আয়ের চার সদস্যের একটি পরিবারের ডাল–রুটি দিয়ে এক বেলা খাবারের খরচের সমান।

২০২৪ সালে ইউনিসেফ ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ওয়াটারএইডের এক গবেষণা অনুযায়ী, বর্তমানে পাকিস্তানের মাত্র ১২ শতাংশ নারী বাণিজ্যিকভাবে তৈরি স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করেন। অন্যরা কাপড় ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে কাজ চালিয়ে নেন। এমনকি নিজেদের পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য অনেক সময় তাঁরা বিশুদ্ধ পানি পর্যন্ত পান না।

পাকিস্তানের দস্তক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক হিরা আমজাদ বলেন, ‘এই পিটিশন সফল হলে স্যানিটারি ন্যাপকিন সাশ্রয়ী হবে।’ দস্তক ফাউন্ডেশন একটি বেসরকারি সংস্থা। এটি লিঙ্গ সমতার প্রচার ও নারীর ওপর সহিংসতার বিরুদ্ধে কাজ করে।

আইনজীবী ও অধিকারকর্মীরা বলছেন, বড়সড় একটি সামাজিক পরিবর্তনের নিয়ামক হতে পারে এই পিটিশন।

আদালতে মাহনূরের এই মামলাকে ‘মাহনূর ওমার বনাম পাকিস্তান সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা’ নামে নথিভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু মাহনূরের কাছে এটিকে বরং ‘নারী বনাম পাকিস্তান’ বলেই মনে হয়।

মাহনূর ওমার বলেন, নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে তার কাজ করার আগ্রহ শুরু হয়েছিল খুব ছোটবেলায়। তিনি বলেন, ‘নিত্যদিন নারীর সঙ্গে ভয়াবহ দুর্ব্যবহার দেখে দেখে এই কাজ করতে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি। রাস্তায়, গণমাধ্যমে কিংবা বাড়ির ভেতর নারীরা যে অর্থনৈতিক, শারীরিক ও মৌখিক শোষণের শিকার হন, সেটা আমার কাছে কখনো গ্রহণযোগ্য ছিল না।’

নিজেকে এমন সহানুভূতিশীল ও বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য মাহনূর সব কৃতিত্ব তার মাকেই দিতে চান।

স্কুলের পাট চুকিয়ে মাহনূর পাকিস্তানের ক্রসরোড কনসালট্যান্ট নামের প্রতিষ্ঠানে লিঙ্গ ও ফৌজদারি বিচারসংক্রান্ত পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেন। এ প্রতিষ্ঠানটি এনজিও ও উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে লিঙ্গ ও ফৌজদারি বিচারবিষয়ক সংস্কার নিয়ে কাজ করে। ১৯ বছর বয়সে তিনি ‘অওরাত মার্চ’ নামের একটি সংগঠনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যুক্ত হন। এটি নারী অধিকার নিয়ে কাজ করে।

মাহনূর ১৬ বছর বয়সে প্রথম নারীদের মাসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ শুরু করেন। তিনি ও তার বন্ধুরা ইসলামাবাদের নিম্ন আয়ের এলাকায় নারীদের জন্য ছোট ‘ডিগনিটি কিট’ তৈরি শুরু করেন।

এই আইনজীবী বলেন, ‘আমরা কেকসহ নিজেদের তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার বিক্রি করে বা নিজেদের অর্থেই তহবিল সংগ্রহ করতাম।’

সেই তহবিল দিয়ে তারা নিজেদের তৈরি প্রায় ৩০০টি ডিগনিটি কিট বিতরণ করতে সক্ষম হন। প্রতিটি কিটে থাকত স্যানিটারি ন্যাপকিন, অন্তর্বাস, ব্যথানাশক ওষুধ ও টিস্যু। তবে তিনি নারীদের জন্য এর চেয়ে বেশি কিছু করতে চেয়েছিলেন।

সেই সুযোগ আসে ২০২৫ সালের শুরুতে সুপ্রিম কোর্টে প্রথমে ল’ ক্লার্ক হিসেবে কাজ শুরু করার পর। বর্তমানে মাহনূর লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসে লিঙ্গ, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করছেন এবং স্নাতকোত্তর শেষে পাকিস্তানে ফিরে আবার তার কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা করছেন।

কর ও সংবিধান–সংক্রান্ত আইনে বিশেষজ্ঞ আইনজীবী আহসান জাহাঙ্গীর খানের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় মাহনূরের। তার সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রথম ‘মাসিক করের’ বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করার পরিকল্পনাটি উঠে আসে।

মাহনূর বলেন, ‘তিনি (আহসান) আমাকে এই পিটিশন দাখিল করতে ও শুধু বসে না থেকে ন্যায় প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।’

আহসান জাহাঙ্গীর খান এই মামলার সহ–আবেদনকারী। তিনি বলেন, করের বিরুদ্ধে লড়াই কেবল স্যানিটারি ন্যাপকিনকে সহজলভ্যতা ও সাশ্রয়ী করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি ন্যায়বিচারের ব্যাপার। তিনি আরও বলেন, ‘এটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার ওপর আরোপিত কর।’

 

 





Source link

Keep Up to Date with the Most Important News

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post
নদী দূষণে ডলফিন ও মানুষ উভয়ই বিপদে: রিজওয়ানা হাসান

নদী দূষণে ডলফিন ও মানুষ উভয়ই বিপদে: রিজওয়ানা হাসান

Next Post
বন্যপ্রাণী হত্যা রোধে নতুন আইনে জামিনের ব্যবস্থা থাকছে না: পরিবেশ উপদেষ্টা

বন্যপ্রাণী হত্যা রোধে নতুন আইনে জামিনের ব্যবস্থা থাকছে না: পরিবেশ উপদেষ্টা

Advertisement